সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের নাগরপুরেও ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। এছাড়াও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু বৃদ্ধাসহ নানা বয়সী মানুষ।
সমগ্র উপজেলাজুড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। বিভিন্ন স্থানে ও গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন অনেকেই। তীব্র শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে খুব সকালে কাজের সন্ধানে রাস্তায় বের হচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। এদিকে কুয়াশা কারণে দিনের বেলাতেও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
নাগরপুর বাজারের রিকশা চালক আব্দুল কাদের বলেন, হিমেল হাওয়ায় রিকশা চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের কারণে অনেকেই বাসা থেকে বের হচ্ছে না। এ জন্য আমাদের আয় অনেকটা কমে গেছে।
উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল রহমান ও সোহেল খান বলেন, তীব্র শীতের কারণে আমরা জমিতে যেতে পারছি না এবং কাজের লোকও সময়মত পাচ্ছি না।
নাগরপুর বাজারের ৬০ বছর বয়সী এক পথচারি বলেন, এবার শীত মনে হচ্ছে অনেক বেশি। গরম কাপড় পড়েও শীত নিবারণ করা যাচ্ছে না। ভ্রাম্যমাণ গরম কাপড় বিক্রেতা নজরুল ইসলাম ওরফে রজব বলেন,তীব্র বাতাস আর শীত পড়ায় প্রচুর গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে। গরম কাপড় কিনতে আসা এক স্কুল শিক্ষক বলেন, নতুন আর পুরাতন গরম কাপড়ের দাম তুলনামূলক গতবারের চেয়ে অনেক বেশি মনে হচ্ছে তারপরও গরম কাপড় কিনতে হবে।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় গ্রামের অস্বচ্ছল ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ চলমান রেখেছেন।
নাগরপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কাজল পোদ্দার জানান, তীব্র শীতে নিউমোনিয়া, ৰংকিওলাইটিস, আ্যজমা, সিওপিডি, ভাইরাল ফ্লু, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গড়ে এসব রোগে আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় একশ রোগি চিকিৎসা নিচ্ছে এবং ইনডোরে ১২ থেকে ১৫ জন গড়ে ভর্তি হচ্ছে। ঠান্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিগণ।
তিনি আরো জানান, ঠান্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি নিয়মিত পুষ্টিকর ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শীত আরও বাড়তে পারে, যা ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকতে পারে। এর মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে আরও দুই দফায়। এছাড়াও জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, টাঙ্গাইলে উত্তরে বাতাস বইছে । এ বাতাস আরও ৪/৫ দিন থাকতে পারে।
এআরএস