ধর্মীয় লেবাসে মসজিদে রাত্রি যাপন, সুযোগ বুঝে চুরি-খুন

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৩, ০৮:৪০ পিএম
ধর্মীয় লেবাসে মসজিদে রাত্রি যাপন, সুযোগ বুঝে চুরি-খুন

মুখে লম্বা দাড়ি, মাথায় টুপি, গায়ে সুন্নতি পাঞ্জাবি আর টাখনুর উপর পাজামা দেখলে যে কেউ ভাববে একজন পাক্কা মুসল্লি তবে এটি তার শুধু ছদ্মবেশ মাত্র।

দিনে ঘুরাঘুরি করে পরিচিত ও সরল মনা লোকজনের সন্ধান করাই তার প্রথম টার্গেট, কথায় মিলে গেলেই ইনিয়েবিনিয়ে তার কাছে যাওয়া, সম্পর্ক সৃষ্টি করে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা  করা অতঃপর গভীর রাতে আশ্রয়দাতার সব কিছু চুরি করে পালিয়ে যাওয়াই তার নেশা এবং পেশা।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় চাঞ্চল্যকর ও ক্লোলেস কেয়ারটেকার কাউসার খান (৪৭) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এমনই এক ব্যতিক্রমী খুনি ও চোরকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১০)। সে চুরি করতে গিয়েই দারোয়ান কাউছার খানকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে র‍্যাব-১০ এর পরিচালক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল ৫ টায় কেরানীগঞ্জের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব-১০ এর কার্যালয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, গত ৯ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আগানগর ইস্পাহানি ২নং রোডের জনৈক আমিনুল ইসলামের বাড়ির কেয়ারটেকার মোহাম্মদ কাউসার খানকে একই মালিকের পার্শ্ববর্তী বাড়ির কেয়ারটেকার নজরুল গার্ড রুমের ফ্লোরে সচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে কাউসার খানের কোন সারা শব্দ না পেয়ে তিনি তার ছেলেকে খবর দেন, কাউসারের ছেলে ঐ স্থানে এসে দেখতে পায় তার বাবা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে, সংবাদ পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ উক্ত স্থানে এসে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করে এবং নিহতের ছেলে বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-১০ এর একটি আভিধানিক দল র‍্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় ১২ জানুয়ারি আনুমানিক বেলা তিনটায় রাজধানীর রমনা থানার কাকরাইল এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি কেয়ারটেকার হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে এবং তার নিকট হতে মৃত ব্যক্তির একটি মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মাসুদ একজন সুযোগ সন্ধানী চোর, সে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জেমদের সাথে ভালো সম্পর্ক করে সেখানে রাত্রী যাপন করে যাওয়ার সময় চুরি করে পালিয়ে যায়। তার লেবাস ও চলাচলে তাকে কেউ সন্দেহ করতো না, এর সুযোগেই সে চুরি করতো। এরই ধারাবাহিকতায় তা গত ৯ জানুয়ারি রাতে ভিকটিম কাউসারের রুমে চুরি করার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে, ভিকটিম কাউসার মাসুদ কে চিনে ফেলায় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়, এবং মাসুদ কাউসারকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, আটক মাসুদ ফরিদপুর জেলার  নগরকান্দা থানার চুকাইড় গ্রামের ওহাব শেখের ছেলে, সে ভিকটিম কাউছার খানের পূর্ব পরিচিত এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

কেএস