পরকিয়ার জেরে গৃহবধূকে হত্যা, দুই প্রেমিকের যাবজ্জীবন

শুভ কুমার ঘোষ, সিরাজগঞ্জ প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩, ০২:০৬ পিএম
পরকিয়ার জেরে গৃহবধূকে হত্যা, দুই প্রেমিকের যাবজ্জীবন

পরকিয়া সম্পর্কের জেরে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গৃহবধূ হত্যার দায়ে দুই পরকিয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ দণ্ডাদেশের রায় প্রদান করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উল্লাপাড়া উপজেলার এনায়েতপুর গুচ্ছগ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. নুর ইসলাম (৪৩) ও একই গ্রামের মো. হানিফ আলীর ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৪৩)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলা পরিচালনাকারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি (পিপি) মো. আব্দুর রহমান।

মামলার অভিযোগ সূত্র ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলির (পিপি) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উল্লাপাড়ার ঘাটিনা মধ্যপাড়া গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের মেয়ে সেতু খাতুন (২০) এর এনায়েতপুর গ্রামের মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরে আবার তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। সেতুকে হত্যার দুই মাস পূর্বে সেতু খাতুনের সঙ্গে উপজেলার বেতকান্দি গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী মো. শিপন কারীর ২য় বিয়ে হয়। এদিকে ২য় বিয়ের আগেই একই সঙ্গে আসামি নুর ইসলাম ও শফিকুল ইসলামের সাথে সেতু খাতুনের পরকিয়া ও অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই একপর্যায়ে  গত ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আসামি নুর ইসলামকে সিএনজি নিয়ে তার স্বামীর বাড়ীতে আসতে বলে সেতু খাতুন।

নুর ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম মধ্যরাতে সেতু খাতুনের স্বামীর বাড়ীতে গিয়ে সেতু খাতুনকে নিয়ে উল্লাপাড়ার ঘাটিনা ব্রিজের পশ্চিম পাশে যান। সেখানে শফিকুল ও নুর ইসলাম তার সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে চাইলে সেতু খাতুন বাধা দিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে একজনকে তাকে বিয়ে করতে হবে বলে জানায়। এছাড়াও তাকে বিয়ে না করলে সেতু খাতুন তাদের বাড়ীতে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করার হুমকি দেয়।

এতে নুর ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম তাদের অবৈধ কর্ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে সেতু খাতুনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেতু খাতুনকে ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে ধুইঞ্চা ক্ষেতে নিয়ে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৩ জন সাক্ষীর স্বাক্ষগ্রহণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আজ আসামি মো. নুর ইসলাম ও মো. শফিকুল ইসলামের উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

সিরাজগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বলেন, আদালতের রায়ের পরে তাদেরকে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করার প্রস্তুতি চলছে।

কেএস