কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মদ পানে বিষক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা সহ ৫ জনের আলোচিত মৃত্যুর ঘটনায় ধোঁয়াশা কাটছে না। সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এই মৃত্যুর ঘটনা।
কীভাবে ঘটলো এ ঘটনা, কোথায় বসে এলকোহল পান করছিলেন তারা, তাদের আড্ডায় কতজন ছিলেন এবং কে কে ছিলো? অ্যালকোহল কোথায় থেকে আনা হয়েছিল, কে এনেছিলো; এসব নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় মৃত্যু নিয়ে রহস্য বেড়েই চলেছে।
এ পর্যন্ত এ ঘটনায় আরও চার জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলন- খোকন মিয়া, উজ্জ্বল, মহসিন মিয়া এবং প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান।
অপরদিকে এ ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হলেও ময়নাতদন্ত হয় তিন জনের। তিনজনের পাকস্থলীতেই এলকোহলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এমনটা জানিয়েছেন, কিশোরগঞ্জ জেলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়া তিনজনের প্রত্যেকের পাকস্থলীতে প্রচুর এলকোহলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে মদ্যপানে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
পাঁচ জনের মধ্যে জহির রায়হান জজ, গিয়াস উদ্দিন ও লিটন মিয়ার ময়নাতদন্ত হয় এবং তাদের পাকস্থলীতে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তিনজনের পাকস্থলীতে এলকোহলের অস্তিত্ব পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাকি দু’জনের ময়নাতদন্ত না করা নিয়েও রহস্য তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজের অনেকেই বলছেন, গোবিন্দ বিশ্বাসের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া কেনো দাহ্য করা হলো? একইভাবে দাফন সম্পন্ন হওয়া শাহজাহানের লাশেরও ময়নাতদন্ত কেনো হচ্ছে না প্রশ্ন তাদের।
ময়নাতদন্ত শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির রায়হান জজ এর মরদেহ সোমবার রাতেই দাফন সম্পন্ন হয় এবং সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন গিয়াসের জানাজা মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে স্থানীয় বড়খারচর ঈদগাহ্ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা নামাজে সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান, সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন লিটন, পৌর মেয়র সৈয়দ হাসান সারওয়ার মহসিন, কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মস্তোফা, উপজেলা পরিষদের সদস্য আব্দুস সাত্তার মাষ্টার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মো. মিজবাহুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. এ হান্নান, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. এমরান মিয়াসহ জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ময়নাতদন্ত শেষে লিটন মিয়ার জানাজা বিকাল সাড়ে পাঁচটায় সম্পন্ন হয়। এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক গোবিন্দ বিশ্বাসের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া সোমবার রাতেই দাহ্য করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, এখন পর্যন্ত নিহত কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলাও হয়নি। তারপরও স্ব প্রণোদিত হয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত ছাড়া গোবিন্দ বিশ্বাসের দাহ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি।
এআরএস