শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় মুসলিম স্থাপত্যের ঐতিহাসিক প্রাচীনতম নিদর্শন খান বাড়ি জামে মসজিদ।
মসজিদটি শেরপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কি.মি. উত্তরে ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের ঘাগড়া লস্কর গ্রামে অবস্থিত। অপূর্ব নকশা কারুকার্য সমৃদ্ধ মুসলিম স্থাপত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হয়ে আজও বিদ্যমান।
স্থানীয় প্রবীণ লোকজন ও ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশির যুদ্ধে পারজিত হওয়ার পর তাঁর যোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। আর আজিমোল্লাহ খান নামে এক যোদ্ধা এখানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তিনি এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। তিনি পালিয়ে এসে এখানে বসবাসের কারণে তাঁর আরেকটি নাম ছিল পলায়ন খাঁ।
১২২৮ হিজরি সনে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে মসজিদটি পুন:সংস্কারের সময় নেম প্লেটে আজিমোল্লাহ খানের দুই পুত্র আফজাল খান ও গোলাপ খানের নাম লেখা রয়েছে। মসজিদটি নির্মাণশৈলী খুবই মনোরম।
মসজিদটি প্রাচীণ স্থাপত্য শিল্পের অনুপম নিদর্শন। এ মসজিদটি বর্গাকারে, যার দৈর্ঘ্য ২৭ ফুট প্রস্থ ও ২৭ ফুট। মসজিদটিতে প্রবেশের জন্য পূর্বদিকে একটি মাত্র প্রবেশ পথ। উপরে পূর্ণ ছাদই একটি মাত্র গম্বুজ দ্বারা তৈরি।
এছাড়াও ৪ কোণে ৪টিসহ মোট গম্বুজ সংখ্যা ১২টি। গম্বুজগুলো নিপুনভাবে তৈরি। মসজিদের দেয়ালের গাঁথুনী ৪ ফুট পাশ, যা চুন ও সুরকি দিয়ে গাঁথা এবং ভিতরে সুন্দর কারুকার্য করা নকশা।
কারণ হিসেবে স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, মসজিদে স্থান সংকুলান হওয়ায় নামাজ পড়া হয়। ১৯৬৮ সনের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ আইনে মসজিদটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। তবে মসজিদের হেফাজত ও সংরক্ষণের জন্য ইতিপূর্বে একজন খাদেম সরকারিভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।
তবে বর্তমানে তা নেই, পত্নতাত্ত্বিক বিভাগ থেকে বহুবার পরিদর্শন করা হয়েছে মসজিদটি।
মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামাজের আযান ও নামাজ আদায় করা হয়। বর্তমানে মসজিদ পরিচালনার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। এ মসজিদটি দেখার জন্যে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থী এখানে ভিড় জমায়।
এআরএস