ঠাকুরগাঁওয়ে শীত আর কুয়াশাকে উপক্ষো করেই জমি তৈরি করে তাতে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে শুরু করেছেন চাষিরা। কৃষকদের আশা, আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বাম্পার ফলন পাবেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত। বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসাম এবং ৫ থেকে ৭ ভ্যান গোবর সার মিশিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কাদা তৈরি করছেন তারা। পরে বীজতলা থেকে চারা এনে সেই জমিতে রোপণ করছেন। ইতোমধ্যে উপজেলায় প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে।
বোরো ধান রোপণের শুরু থেকে কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত সময় লাগে ৯০ দিন। কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বোরো চাষিদের খরচ হয় প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। গেলো বোরো মৌসুমে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এবারও দাম ভালো পাওয়ার আশায় আছেন চাষিরা।
সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের মুমিন মিয়া বলেন, ‘আমি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছি। অর্ধেক জমিতে চারা রোপণ হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ জমিতে চারা রোপণ শেষ হবে। গতবার ফসলের দাম ভালো পেয়েছি। আশা করছি এবারও বোরো ধানের ফলন ভালো হবে। দামটাও ভালো পাবো।’
শিবগঞ্জ এলাকার কৃষক হোসেন বলেন, ‘হারা ছোট-খাটো কৃষক মানুষ, হামার বেশি আবাদি জমি নাই, মিচ্চে এ্যানা (অল্প) জায়গা আছে, ওটায় আবাদ করি। মানুষোক নিয়ে কাম করে নেউনা, নিজেই সব করি। বছরে ইরি আর আমন ধান লাগাউ, তাতে আল্লাহ দিলে ভালোই আবাদ হয়, ভালোই চলু। এবারও লাগাছি হারা, দেখু কি হয়?’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমন ধান কাটা-মাড়ায়ের পর ওই জমিতে কৃষকরা সরিষা ও আলুর চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। এখন শুরু হয়েছে বোরো মৌসুম। বোরো ধান চাষের জন্য জমি তৈরি করে, তাতে ধানের চারা রোপণ শুরু করেছেন চাষিরা। আশা করছি এবারও কৃষকরা তাদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।’
আরএস