চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে বোর আবাদ বাড়লেও কমেছে বিষ বৃক্ষ তামাক চাষ। প্রতি বছরে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর, মিরপুর ও কুষ্টিয়ার আংশিক এলাকায় ব্যাপক হারে তামাক চাষ বৃদ্ধি পেলেও এবার অনেকটায় কমেছে। টোব্যাকো কোম্পানীর ফাঁদে পা না দিয়ে কৃষি কর্মকর্তাদের উপদেশে চাষীরা এ মৌসুমে ব্যাপক হারে বোর আবাদে ঝুকিছে। এতে করে কুষ্টিয়া অঞ্চল খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করছে কৃষি কর্মকর্তারা।
গঙ্গাবাহিত পলি মাটির কারণে এই অঞ্চলের প্রধান ফসল ধান। এই অঞ্চলের মাটি উঁচু এবং মাঝারি উঁচু জমিতে হালকা বুনটের বেলে হতে দোআঁশ এবং নিচু ও মাঝারি নিচু জমিতে পলি দোআঁশ থেকে এটেল দোআঁশ বুনট বিশিষ্ট।
তাই ধান ভিত্তিক দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমি এ এলাকার প্রধান শস্য বিন্যাস। ধান ছাড়াও কুষ্টিয়ার সব কয়টি উপজেলায় গম, ভুট্টা, সরিষা, মটর, খেসারি, মাসকলাই, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, ধনিয়া, আলু, পটল, বেগুনসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি ছাড়াও আখ, পাট তামাক চাষ হয়ে থাকে।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে চলতি বোর মৌসুমে জেলায় গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ১৪৭ হেক্টর সেখানে আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৪ হেক্টর জমিতে। ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৯১৬ হেক্টর জমি সেখানে আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৯২২ হেক্টর জমিতে সেখানে আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে।
গত বছরে তামাক চাষ হয়েছিল ১১ হাজার ৯২৬ হেক্টর জমিতে এবার তা কমে ১০ হাজার৭৭১ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে। কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শে তামাকের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে ধীরে তামাক চাষ কমিয়ে ফেলছে। আগামী মৌসুমী তামাক চাষ আরো কমে আসবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন।
গত মৌসুমে মিরপুর উপজেলাতে ৭ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল, চলতি মৌসুমে সেইটা কমে দাড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৫ হেক্টরে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সরকারি প্রণোদনা সরাসরি কৃষকদের হাতে তুলে দিতে পেরেছি আনন্দঘন পরিবেশে, যার কারনে শতঃস্ফুত ভাবে রবিশস্য চাষে কৃষকেরা আগ্রহী হয়েছে, তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষনিক কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান করছে। যে কারনেই এবার রোব মৌসুমে তামাক চাষ কমে রবি শষ্য বেশী হচ্ছে। কুষ্টিয়া, মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলায় তামাক চাষ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
চাষীরা বলছেন, টোব্যাকো কোম্পানী গুলো তাদেরকে নগদ অর্থসহ সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহসহ অধিক মুল্যে তামাক ক্রয়ের নিশ্চতা প্রদান করায় তারা তামাক চাষে ঝুকে পড়েছিল।
কেএস