শতবর্ষের বিএম কলেজের ক্যান্টিন বন্ধ

বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩, ০৪:২১ পিএম
শতবর্ষের বিএম কলেজের ক্যান্টিন বন্ধ
  • ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর ভোগান্তি

প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর বিদ্যাপিঠ সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ক্যান্টিনের নাম পরিবর্তন করেও সচল রাখা সম্ভব হয়নি। করোনার সময় বন্ধ হওয়ার পর দীর্ঘদিনের এ ক্যান্টিনটি চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যান্টিনটি চালুর দাবি করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, বিএম কলেজের বিশাল ক্যাম্পাসের মাঝামাঝিস্থানে ক্যান্টিনটির অবস্থান। করোনার সময় থেকে শুরু করে অদ্যবর্ধি এ ক্যান্টিনটি বন্ধ থাকায় এখন তাদের ক্লাসের ফাঁকে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে ক্যাম্পাসের বাহিরে গিয়ে নাস্তা করে আসতে হয়।

এছাড়া ক্যাম্পাসের বাহিরে ভালো মানের কোন খাবারের দোকানও নেই। এজন্য অনেক সময় বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে তাদের খাবার ক্রয় করতে হচ্ছে।

সূত্রমতে, শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহি সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ক্যান্টিনটি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় সবসময় মুখর থাকতো। পরিচালনাকারীরা পাল্টে যাওয়ায় কয়েকবছর আগে ক্যাফে জীবনানন্দ নামে ক্যান্টিনটি যাত্রা শুরু করে। এরপর মাত্র দুই বছরের মতো সচল ছিল ক্যান্টিনটি। মহামারির করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ক্যান্টিনটি বন্ধ রয়েছে। আর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মরিচা ধরেছে ক্যান্টিনের সদর দরজার তালাতে। পাশাপাশি ধুলোর আস্তরে ঢাকা পরেছে কলেজ ক্যান্টিনের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র। 

সজীবুর রহমান নামের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, ব্রজমোহন কলেজের ২২টি বিভাগে অনার্স, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছাড়াও এইচএসসি, ডিগ্রি মিলিয়ে ৩০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছেন। বর্তমানে বন্ধ থাকা ক্যান্টিনের সামনের বারান্দা ও মাঠে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত আড্ডা দিচ্ছেন। ক্যান্টিনের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ আর হচ্ছে না। জানালা দিয়ে ক্যান্টিনের ভেতরের অবক্ষয় দেখা ছাড়া এখন আর উপায় নেই।

বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সভাপতি আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, ক্যান্টিনটি ভালোভাবেই চলছিলো। করোনার আগে ছাত্রলীগ নেতারা ক্যান্টিনটি পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, যতদূর শুনেছি অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ক্যান্টিনটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। 
তিনি বলেন, কলেজ প্রশাসন ক্যান্টিন চালুর জন্য উদ্যোগী না হলে আসবাবপত্রগুলো নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ভবনটিও জরাজীর্ণ হয়ে পরবে।

বিএম কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আল-আমিন সরোয়ার বলেন, ক্যান্টিনটি কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি, তবে এটি বন্ধ থাকায় এখন সংস্কারের প্রয়োজন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের পর কলেজ ক্যান্টিন চালু করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের শেষের দিকে ব্রজমোহন কলেজ ক্যান্টিনের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও কলেজের ছাত্রলীগ নেতা আতিকুল্লাহ মুনিম এবং তার কয়েকজন সহযোগি। তখন কলেজ ক্যান্টিনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ক্যাফে জীবনানন্দ’। করোনার সময় ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যায়। করোনার ধকল কাটিয়ে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হলেও অদ্যবর্ধি বন্ধ রয়েছে কলেজ ক্যান্টিনটি।

কেএস