লক্ষ্মীপুরে অপহৃত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩, ১২:৫৫ পিএম
লক্ষ্মীপুরে অপহৃত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

লক্ষ্মীপুরে অপহরণের পর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে রিয়াজ হোসেন (২৫) নামে এক ফার্ণিচার কারিগরকে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন মান্দারী ইউনিয়নের মান্দারী পূর্ববাজার এলাকার উম্মে সালমা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে দুদিন পর অপহৃত ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ।

নিহত রিয়াজ দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রামের মোহাম্মদ উল্যা মেইকারের বাড়ির তোফায়েল আহমেদ দুলালের ছেলে ও মান্দারী বাজারের দ্বীন ইসলাম ফার্ণিচার দোকানের নকশার কারিগর তিনি।  

পুলিশ জানায়, এরআগে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান থেকে বের হওয়ার পর সে নিখোঁজ হয়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিয়াজের মোবাইলফোন থেকেই অপহরণকারীরা কল দিয়ে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে। একইদিন সন্ধ্যায় নিহতের মা’ খুরশিদা বেগম চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

এর প্রেক্ষিতেই তদন্ত শুরু করে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনাটি থানা থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য র‌্যাবের কাছে সহযোগীতা চাওয়া হয়। পরে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মান্দারী বাজারের একটি ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে রিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এনিয়ে এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ এক আবেগঘন স্ট্যাটাস পোষ্ট করেন জেলা পুলিশের ফেসবুক আইডিতে। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘একটি বড় বিল্ডিংয়ের নিচতলা করিডোর দিয়ে পেছনের একটি কক্ষে ঢুকে রিয়াজের মরদেহ দেখা যায়। মরদেহ উপুড় হয়ে পড়ে থাকায় মুখ দেখা যাচ্ছিল না। তার হাত-পা বাধা ছিল। খাটের ওপর জাজিম রক্তে মাখা ছিল। তার মুখমন্ডলসহ শরীরেও রক্ত ছড়িয়ে ছিল। দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছিল।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াজের বড় ভাই রুবেলের সঙ্গে মান্দারী বাজারে একটি ফার্ণিচারের দোকানে নকশার কারিগর হিসেবে কাজ করতো। তার সঙ্গে কাউছার নামে আরও একজন নকশার কারিগর ছিলেন। কাউছার বাজারের পাশেই উম্মে সালমা ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতো। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের বাবা তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুদিন আগে আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়। পরে তার মোবাইল থেকেই কল দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। ওই টাকা না দেওয়ায় অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুর রহিম জানিয়েছেন, নিহতের মায়ের অভিযোগ পেয়ে র‌্যাবের সহযোগীতা নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা তদন্ত শুরু করেন।

এরপর জানা যায়, দুই মাস আগ থেকে উম্মে সালমা ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতো। বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে তার (রিয়াজ) মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে প্রথমদিনই তাকে হত্যা করা হয়। তার মাথায় ছোরার আঘাত ছিল। শরীরের বিভিন্ন অংশে কালছে জখম দেখা গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।

এআরএস