পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
শনিবার (৪ মার্চ) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ মুহিমুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, পূর্ব থেকেই আমরা দাবি জানিয়ে আসছিলাম কাদিয়ানীদের সালানা জলসা বন্ধ করতে। কিন্তু তা বন্ধ না করার ফলে স্থানীয় তৌহিদী জনতা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। এর ফলে মুজনকে প্রাণ দিতে হলো। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে নিহতের পরিবারের প্রতি আমরা গভীর শোক ও সমবেদনা জানাই। সেই সাথে আমরা এই ঘটনায় যারা আহত হয়েছে, তাদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাদিয়ানীদের জলসা বন্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে হেফাজত নেতারা বলেন, যদি এই কাজটি দুইদিন আগে করা হতো, তাহলে এতোগুলো জান-মালের ক্ষতি হতো না। সঠিক সময় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিতে না পারার ব্যর্থতায় সাধারণ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া ও কিছু দোকানপাটে ভাংচুরের ঘটনায় হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলাম কারো জান-মালের ক্ষতিসাধনকে সমর্থন করেনা। আমরা মনে করি নবী প্রেমিক তৌহিদী জনতার এসবের সাথে যুক্ত নয়। তৌহিদী জনতার প্রতিবাদকে ভিন্নখাতে প্রভাহিত করার জন্য বিশেষ কোন গোষ্ঠী এই কাজ চালাতে পারে। তাই প্রশাসনের উচিৎ তাদের খুঁজে বের করা। তবে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় তৌহিদী জনতাকে যেন হয়রানির শিকার না হতে হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রশাসনকে।
হেফাজত নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, দেশের কাদিয়ানী সমস্যার সমাধান জরুরি। তাই কাদিয়ানী সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা। অমুসলিম সংখ্যালঘু হিসেবে তারা নিজ ধর্ম পালন করলে আমাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু খতমে নবুওয়াতকে অস্বীকার করে মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী মেনে তারা কোনভাবেই মুসলিম পরিচয় বহন করতে পারে না। বিশ্বের সকল আলেমের ঐক্যবদ্ধ ফতোয়া হচ্ছে কাদিয়ানী সম্প্রদায় কাফের। কিন্তু তারা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিয়ে সাধারণ মুসলমানদের ঈমানহারা করে যাচ্ছে। তাই অবিলম্বে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা জরুরি।