হঠাৎ করেই মাদারীপুর-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী বাস ভাড়া বৃদ্ধি করায় ক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রীরা। পূর্বে মাদারীপুর-ঢাকা রুটের নির্ধারিত ভাড়া ছিলো ৩০০টাকা। গত দুই সপ্তাহ থেকে বাস ভাড়া ১০০ টাকা বাড়িয়েছে বাস মালিক সমিতি। এতে করে ক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রী।
যাত্রীদের দাবি, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। দ্রুতই বাস ভাড়া কমানো দাবি তাদের। তবে বিআরটিএর কর্মকর্তার দাবি সরকার নির্ধারিত ভাড়াই আদায় করছে বাস মালিকরা। এদিকে মাদারীপুর জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকতা বিষয়টি তদন্ত দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর-ঢাকা রুটে সার্বিক পরিবহন, চন্দ্রা পরিবহন, সোনালী পরিবহন ও মাদারীপুর পরিবহন নামে ৪টি পরিবহন কোম্পানী যাত্রী সেবা দিয়ে থাকে। এসব পরিবহনে এক মাস আগেও মাদারীপুর -ঢাকা রুটের যাত্রীবাসী বাসে জন প্রতি বাস ভাড়া ছিলো ৩০০ টাকা। গত দুই সপ্তাহ থেকে ভাড়া বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০০টাকা। এতে করে এই রুটে যাতায়াতকারী নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে।
যাত্রীদের দাবি, জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি না পেলেও কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে করে যাত্রীদের যাতায়াতের ব্যয় বেড়েছে। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে যাত্রীরা। দ্রæত বাস ভাড়া কমানো দাবি যাত্রীদের।
ঢাকাগামী যাত্রী গাউসুর রহমান বলেন, মাদারীপুরসহ সারা দেশ একটি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। তাদের জনগনের কাছে কোন জবাবদিহীতা নেই। তাই সবকিছুই খেয়াল খুশি মত করছে। ভাড়া বাড়ানোর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের উপর চাপ পড়ছে। আমরা চাই দ্রুতই ভাড়া কমানো হোক।
লাকী আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রী বলেন, আগে ভাড়া ছিলো ৩০০ টাকা। এখন বাস ভাড়া বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০০টাকা। আমাদের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের দেখা উচিত।
মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, ঢাকা-মাদারীপুরে রুটের বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১০০টাকা। কিন্তু ভাড়া বাড়ানোর সময় যাত্রীদের কোন মতামত নেয়া হয়নি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারন করা উচিত ছিলো। বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত।
মাদারীপুর সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর সহকারী পরিচালক মো. নুরুল হোসেন জানান, বাংলাদেশে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে সরকারের নীতি নির্ধারকরা সারাদেশের বাস ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করে। সেই সময় মাদারীপুর রুটে বাস ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৩৯৩ টাকা।
তিনি আরও জানান, মাদারীপুর থেকে ঢাকার দুরত্ব ১১০ কিলোমিটার। প্রতিকিলোমিটার ভাড়া ২.১৫ টাকা। এর সাথে পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেস ওয়ের টোল যুক্ত করতে হবে। তবে মাদারীপুর রুটের বাস মালিকরা নতুন নির্ধারিত ভাড়া দুই সপ্তাহ আগে কার্যকর করেছে। এই ভাড়া হঠাৎ করেই বাড়েনি।
মাদারীপুর আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার কামরুল হাসান তুষু জানান, গত সেপ্টেম্বর থেকে তেলের দাম বাড়ার কারনে বাসভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এটা নতুন করে না। আগেই ৪০০ টাকা ভাড়া আগেই নির্ধারণ করা ছিল। পদ্মা সেতুর চালুর পরে প্রতিযোগিতা মুলক বাজার ধরার জন্য এক এক কোম্পানী এক এক রকম ভাড়া নিত। এখন যেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এটা সরকারের নীতিমালা মেনেই নেয়া হয়। এখানে সিন্ডিকেটের যেই অভিযোগ আনা হচ্ছে এটা ভিত্তিহীন।
মাারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ভাড়া বাড়াতে হলে সরকারের নীতিমালা মেনে ভাড়াতে হবে। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকে তাহলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।