যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

নলছিটি, প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৩, ০৪:২৮ পিএম
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

ঢাকার কোতোয়ালি থানার নবাবপুরে চাঞ্চল্যকর রজব আলী হত্যাকান্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. মিলন সিকদার ওরফে চোপা মিলন কে  র‌্যাব-৩ এর সহায়তায় গ্রেফতার করেছে নলছিটি থানা পুলিশ। 
গতকাল শনিবার (১ এপ্রিল) রাতে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নলছিটি থানার এস.আই. মো. এনামুল হাসান এর নেতৃত্বে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে র‌্যাব-৩ এর সহায়তায় গ্রেফতার করে পুলিশ।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. মিলন সিকদার ওরফে চোপা মিলন (৩৮) নলছিটি উপজেলার চৌদ্দবুড়িয়া এলাকার মৃত আব্দুল মান্নান সিকদারের ছেলে। 

পুলিশ জানায়, আসামি মিলন ও রজব আলী ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। তারা দুজনেই মাদকাসক্ত ও বন্ধুদের সাথে দল বেধে মাদক সেবন করত। একদিন মাদক সেবনের সময় তাদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তখন রজব আলী তাদের মাদক সেবনের সঙ্গী সজিব নামে একজনের মোবাইল জামানত রেখে মাদকের টাকা সংগ্রহ করে সকলে মিলে দল বেধে মাদক সেবন করে। 

পরবর্তীতে জামানতের টাকা পরিশোধ না করেই তারা ভিকটিমের নিকট জামানত দেওয়া মোবাইলটি দাবী করে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। 

শত্রুতার জেরে রায় সাহেব পাড়া এলাকার ছেলেরা উক্ত মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি জিকুর নেতৃত্বে আসামি মো. মিলন সিকদার ওরফে চোপা মিলনসহ রহিম ওরফে আরিফ, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শাহীন চাঁন খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু ভিকটিম রজব আলীকে শায়েস্তা করার জন্য পরিকল্পনা করে। 

২০১১ সালের ২৪ জুলাই রাতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানাধীন নবাবপুরে মোবাইলের দোকানে রজব আলী টাকা রিচার্জ করতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জিকুসহ আরও ৪ থেকে ৫জন মিলে  রজব আলীকে ঢাকা জজ কোর্টের পিছনে ১৬/এ কোর্ট হাউজ স্ট্রিটের পূর্ব পাশে নিয়ে যায়। 

সেখানে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা মিলন, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শাহীন চাঁন খাদেমসহ সকলে মিলে রজব আলীর উপর এলোপাতাড়ি আক্রমণ করে বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করলে রজব আলী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সে সময় রজব আলী চিৎকার করলে চারপাশ থেকে লোকজন ছুটে এলে তারা সকলে পালিয়ে যায়। রজব আলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় পথচারীরা প্রথমে নিকটস্থ ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যায়। 

ঐ ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় রজবের ভাই জুম্মন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালে ০৫ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৩ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেয়। আদালত ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৯ সালের ১ আগস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেন। 

উক্ত রায়ে জিকু, রহিম ওরফে আরিফ ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগারকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় এবং আসমী মিলনসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান জানান, গোয়েন্দা তৎপরতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শনিবার রাতে মিলনকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে দুপুরেই আদালতে পাঠানো হয়েছে।