মেহেরপুরের গাংনীতে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেহেল নামের দুই সহদোর ভাই হত্যা মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
রোববার বেলা বারোটার দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস চঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, কাজিপুর গ্রামের আছের উদ্দীনের ছেলে আতিয়ার (৪২), আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দীন (৪২), কিয়ামতের ছেলে হালিম (৩৪), নজির উদ্দীনের ছেলে দবির উদ্দীন (৩৩) নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪১), মৃত দবীর উদ্দীনের ছেলে শরিফ (৩৯) ও ফরিদ (৪৬), আফেল উদ্দীনের ছেলে আজিজুল (৩৫), মুনছারের ছেলে মনি (২৭) ।
আসামীদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক থাকলেও রায় প্রদানের সময় দন্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বাকি ৫ জন আলমাস, আরিফ, রাজিব, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বেকুসর খালাস প্রদান করেন আদালত।
মামলার বিবরনে জানা গেছে ২০১২ সালের ৫ জুন কাজিপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় একই গ্রামের কিয়ামুর্দ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলাম (৪০) ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নাই পরদিন সকালে কাজিপুর গ্রামের মন্ডল পাড়ার তো বাংলাদেশ ভারত ১৪৫ নং/এস-৬ নং সীমানা পোলার এর কাছ থেকে বাংলাদেশ সীমানার ভেতরে ৭০-৭৫১ দক্ষিনে জনকে লালটুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে দুই সহোদর ভাই হত্যার ঘটনায় তাদের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে ৩০২/৩৪ ধারায় গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১। জি আর কেস নং ৪৩৩/১২। দায়রা নং ১১/২০১৫। পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ওসি আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য প্রমানের উপর ভিত্তি করে ৯ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয় আদালত।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক। এবং আসামি পক্ষে এ্যাডঃ এ কে এম শফিকুল আলম , আতাউল হক ও কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।
এ মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অ্যাড. কাজী শহীদুল হক। তিনি বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায় নজির হয়ে থাকবে। কারণ মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তি মূলক জবানবন্দীও রয়েছে।
অন্যদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবি অ্যাড. এ.কে.এম শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চতর আদালতে আপিল করবো।
আরএস