প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হবে বান্দরবানে উৎপাদিত প্রথম কলাবতী শাড়ি

বান্দরবান প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম
প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হবে বান্দরবানে উৎপাদিত প্রথম কলাবতী শাড়ি

বান্দরবানে কলাগাছের তন্তু থেকে উৎপাদিত প্রথম কলাবতী শাড়ি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া হবে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরিজী।

রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। 

অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে তাঁত বুনন শিল্পী রাধাবতী দেবী বলেন, কলাগাছের সুতোয় আগে কখনো শাড়ি বুনা হয়নি। এলাকার অন্য মনিপুরী শিল্পীরা নিষেধও করেছিল এই প্রকল্প থেকে বিরত থাকতে। জেলাপ্রশাসক যখন কলাগাছের তন্তু থেকে শাড়ি তৈরি করার অনুরোধ করেছিলেন তখন প্রথম পর্যায়ে ভয় পেয়েছিলাম। তবে ঈশ্বরের কৃপায় এই শাড়ি তৈরি করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।  

এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, ২০২১ সালে কলাগাছ হতে তন্তু উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এজন্য জেলার ৬৩টি গ্রামের উপর সমীক্ষা করে কলা গাছের তন্তু উৎপাদন প্রকল্পের জন্য ৯টি পাড়া ও গ্রামকে নির্বাচন করা হয়েছিল এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু করতে বেশ কয়েকজনকে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। পরে একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর তন্তু উৎপাদন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।

এই তন্তু তৈরি করতে কলা গাছ সংগ্রহ থেকে তন্ত (সুতা) উৎপাদন পর্যন্ত বেশ কয়েক ধাপে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি কেজি তন্তু উৎপাদনের জন্য ৫টি কলা গাছের প্রয়োজন হয়। প্রথমদিকে এই তন্তু থেকে মহিলাদের গয়না, কলমদানি,পাপোষ ও শো-পিস তৈরি করা হতো। যা নীলাচলে অবস্থিত ব্রেন্ডিং বান্দরবন ষ্টলে পাওয়া যেত। এছাড়া স্থানীয় বাজারে এই তন্তুর চাহিদা কম থাকায় কুরিয়ারের মাধ্যমে অন্য জেলায় পাঠাতে হতো। ফলে উৎপাদন ও পারিশ্রমিক খরচ পুষতনা। 

একারণে বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে কাপড় বুনার উপযোগী তন্তু উৎপাদন করা হয়। যা থেকে ইতি মধ্যে পরিক্ষা মূলক ভাবে কয়েকটি চাদর ও জামদানী শাড়ির আদলে একটি শাড়ি তৈরি করা হয়। এই শাড়ি উৎপাদনের জন্য কারিগরি সহায়তা করেছেন মৌলভীবাজারের রাধাবতী দেবী। 

যিনি বান্দরবানে এসে ১৫ দিনের পরিশ্রমের বিনিয়মে এ শাড়িটি বুনে দিয়েছেন। কলা গাছ ও বুনন শিল্পী রাধাবতী দেবীর নাম অনুসারে শাড়িটির নামকরণ করা হয় কলাবতী শাড়ি। এই শাড়িটি শতভাগ পরিবেশ বান্ধব ও জামদানীর আদলে তৈরি হওয়ায় ভবিষ্যতে উৎপাদিত এই শাড়ির মূল্য ৩ -৫ হাজার টাকা হতে পারে বলে জানান তিনি।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবিরিজী। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক লুৎফুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুরাইয়া আক্তার সুইটি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, এনডিসি শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া চৌধুরী, তাঁত শিল্পী রাঁধাবতী দেবী, সাইং সাইং উ নিনি প্রমূখ।

এমএইচআর