ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার কামদেবপুর ও গোপালপুর গ্রামের প্রায় ৫০ পরিবার শীতলপাটি তৈরির কাজের সাথে জড়িত। প্রতিবছর ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে পাটির চাহিদা বেরে যায় বহুগুন। গরমকাল এলেই শীতলপাটির চাহিদা বেরে যাওয়ায় ক্রেতা ও পাইকারদের ভিড় জমে পাটিকর পাড়ায়।
এতে ব্যস্ত হয়ে পরে এ কাজে সাথে জড়িতরা। ঝালকাঠি জেলার ব্রান্ডিং পণ্য শীতলপাটি এখানের চাহিদা পূরন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে পাটি। মুর্তা গাছ (পাইত্রা) কেটে বেতি বের করে রৌদে শুকিয়ে শীতলপাটি তৈরি করা হয়। শীতলপাটি নামটা শুনলে বোঝা যায় এর উপরে শুলে গরমে ঠান্ডা অনুভূত হওয়ার একটা প্রচলনা রয়েছে।
ঘরের বিছানায় চাদরে উপরে বিছিয়ে গরম মৌসুমে ঘুমানোর জন্য স্বস্তিদায়ক বলে শীতলপাটির কদর যুগ যুগ ধরে। গ্রামীন এই ঐতিহ্যবাহী পণ্যটি এখন বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। বংশ পরমপরায় অনেকে বাব দাদার এই পেশাকেই ধরে রাখতেই এ কাজের সাথে জরিত রয়েছে। সব চাইতে বেশি পাটি বিক্রি হয়ে থাকে চট্টগ্রাম লালদিঘীপাড় মেলায় বছরে ৪ থেকে ৫ হাজার পিছ শীতলপাটি বিক্রি করে থাকেন এখানকার পাটিকররা।
গোপালপুর কামদেবপুর এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে শীতলপাটি বিক্রি করে। তাদের একমাত্র পেশা হচ্ছে পাটি তৈরি করা। সেখানকার তপন পাটিকর জানান তাদের পরিবারের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারা পাটি তৈরির কাজে সহযোগীতা করে। পাটি বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার।
কাজল পাটিকর জানান ৫ জনের পরিবারে একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে শিতলপাটি বিক্রি আর সেই বিক্রিত আয়দিয়েই চলে তাদের পরিবারের ভরোন পোষন। চন্দন পার্টিকর বলেন শিতলপাটি তৈরির কাজ ১২ মাসই থাকে কম বেশি থাকে, তবে গরমের মৌসুমে সব চাইতে বেচা বিক্রি বেশি হওয়ায় আমাদের কাজের চাপ খুব বেশি ।
সুজন চন্দ্র পাটিকর বলেন বর্তমানে শীতলপাটি বাজার মোটামুটি ভালো, তবে পাটি তৈরি করতে একজন লোকের ২থেকে ৩দিন সময় লেগে যায়, সে তুলনায় মজুরি কম পরে যায়। প্রকারভেদে প্রতিটি শীতলপাটির দাম ১হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হয়ে থাকে। তাতে করে একজন পাটিকর বছরে ১লাখ থেকে দের লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।
স্হানীয় ৭নং ইউপি ওয়ার্ড মেম্বার জাহিদুল ইসলাম দোলন বলেন এখান কার বসবাসকারী পাটিকররা শিতলপাটি তৈরি করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে । ৫নং সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষোদের চেয়ারম্যান আঃ গফফার খান জানান পাটিকরদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি সুযোগ সু্বিধা যে যতটুকু পেতে পারে তা আমরা দিয়ে থাকি। তাদের ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে পাটিকরদের সাথে আলাপ করে স্থানীয় ভাবে কিছু করার উপায় থাকে তা আমরা করার চেস্টা করবো।
এব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা নাহিদ বলেন, শীতলপাটি তৈরির কাজের সাথে যে পরিবার গুলো জড়িত তাদের প্রয়োজনে যে কোন সহযোগীতা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করার চেস্টা করা হবে। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা করে তাদের শীতলপাটি বিক্রিও প্রচারণা এবং কি ভাবে সম্প্রসারণ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এইচআর