ঠাকুরগাঁওয়ে টানা চৈত্র থেকে বৈশাখ পর্যন্ত তীব্র দাবদাহে ঝরে যাচ্ছে আমের গুটি। কোন ভাবেই আটকানো যাচ্ছে না ঝরে পড়া থেকে। এসময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গুটি ঝরে যাওয়ায় বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণের কারণে ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষি ও বাগান মালিকরা।
গত কয়েকদিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় আম বাগানে সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।
এ সময় অনেক বাগান মালিককে ক্ষুব্ধ হয়ে বাগান ছেটে ফেলতে দেখা গেছে। অনেক বাগান মালিকরা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন গতকয়েক বছর ধরে আমের বাগানে তেমন লাভের মুখ দেখছেন না তারা। করোনা প্রভাব কাটতে না কাটতেই গত বছরের শীলাবৃষ্টিতেও আম ও লিচুসহ কৃষকদের অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এবার আবার দাবদাহ, ক্ষরা। পর্যাপ্ত পরিমাণে দাম ও ফলন না পেলে অনেক বাগান মালিকরা তাদের বাগান ছেটে দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম্রপালি, হাড়িভাংগাসহ অন্যান্য জাতের প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান আছে। চলতি বছর স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত না থাকায় এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে আমের মুকুল আসার কারণে এসব বাগানের মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে ফলে বাগানের আমের গুটি ঝরে পড়ছে।
এমতাবস্থায় বাগানে হালকা সেচের পাশাপাশি আমের গুটি ঝরা রোধে পরিমিত মাত্রায় বোরন ও প্রয়োজনীয় কিটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
আম চাষি হাফিজুল ইসলাম জানান, ‘আমগাছে এবার প্রচুর মুকুল আসছিল, গুটিও ভালো ধরেছে। কিন্তু প্রচণ্ড রোদের কারণে গুটি ধরে রাখতে পারছিনা। ছোট-বড় আমের গুটি ঝরে পড়ছে। এতে করে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন ফলনে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।’
মুক্তারুল ইসলাম জানান,গত দুই বছরে আমবাগানে লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর আমের মুকুল বেশি আসছিল।আশাও করেছিলাম অনেক। কিন্তু পোকা রোদের কারণে গুটি টিকাতে পারছি না। প্রয়োজনীয় কিটনাশক ব্যবহার করে অবশিষ্ট যে আম টিকে আছে, তা আবার তীব্র গরমে শুকিয়ে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এতে এবার আমের ফলন কম হবে। ভালো দাম না পেলে এবারো লোকসান গুনতে হবে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, তীব্র দাবদাহ এবং মুকুল পর্যাপ্ত আসায় হোপার পোকার আক্রমণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যেসব বাগানে আম ঝরে যাচ্ছে, সেসব বাগানে বিকেলের দিকে পরিমিত মাত্রায় বোরন স্প্রে করলে আম ঝরা রোধ করা যাবে বলে জানান তিনি।
এআরএস