ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে পরিবারের ভাগ্যেরবদল হয়েছে। ঘরের অভাবে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ে দিতে পারছিলেন না। সরকারি ঘর পেয়ে মেয়েদের বিয়ে দিতে পারছে। অন্যের জমিতে যারা কাজ করতেন তাদের অনেকেই ছোটখাটো ব্যবসা করছেন। কেউ অটোরিকশা চালিয়েও জীবিকা নির্বাহ করছেন। নারীরা গরু, ছাগল লালনপালনের পাশাপাশি সেলাইয়ের কাজ করেছেন। নানা ধরনের আয়বর্ধক কাজে জড়িত হয়ে সবাই এখন অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল। দিন বদলের এমন চিত্র ফুটে ওঠে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুই শতাংশ জমির ওপর স্বপ্নের পাকা ঘরে আশ্রয় পাওয়া পরিবারের ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাঁচভাগ ইউনিয়নের গাভীশিমুল গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫২ টি ঘরের মধ্যে একটি ঘরে আশ্রয় মিলে সুফিয়ার পরিবারের। সুফিয়া(৪২) তাঁর স্বামী ওয়াকিল মিয়া(৫০) সাথে পরের জমিতে ছোট্ট একটি কোড়ের ঘরে এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে বহু কষ্ট করে থাকতো। প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকেও বিয়ে দিতে পারছিলেন না। সরকারের ঘর পেয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো। বড় মেয়েকে ভালো ঘরে বিয়ে দিতে দিয়েছেন। সরকারের দেওয়া ঘরে আশ্রয় পেয়ে সুফিয়া পরিবারের আয়েও ভূমিকা রাখতে শুরু করে। আশ্রয়ণের ঘরের পাশে একটি একচালা ঘরে গরু পালন শুরু করে। একটি গাভীর দুধ বিক্রি করে সে দৈনিক ১৬০ টাকা আয় করে এখন পরিবারের আয়ে ভূমিকা রাখছে।
রহিমা (৩০) বলেন, মামা শ্বশুরের বাড়িতে একঘরে থাকতো। পরে সরকার এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে রহিমার শাসুরী নাছিমা একটি ঘর পায়। সেই ঘরে শ্বাশুড়ির সঙ্গে রহিমা ও তাঁর স্বামী নয়ন থাকে। নয়ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশের গাভীশিমুল বাজারে মুদির ব্যবসা করে। আর রহিমা সরকারিভাবে সেলাই মেশিন পেয়েছেন। যা দিয়ে সে আয় করে পরিবারের ভূমিকা রাখছে।
রহিমার মতো হনুফা সেলাই মেশিন দিয়ে আয় করছে। সে দক্ষ কারিগর বলে বাহির থেকেও তাঁর কাছে সেলাইয়ের কাজ আসে। আর তাঁর স্বামী ফারজুল ইসলাম অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারে সচ্ছলতা নিয়ে এসেছে। এরকম আরও ৬ জন মহিলা সরকারি ভাবে শেলাই মেশিন পেয়েছে যা দিয়ে আয় করে পরিবারে ভূমিকা রাখছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুই শতাংশ জমির ওপর স্বপ্নের পাকা ঘরে ঠাঁই হয় ভূমীহীন সমলা খাতুন(৩৪) ও তার স্বামী কাজল(৪০)। তাদের ঘরে যেতেই দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দেয়ালে ঝুলছে । শুধু তাই নয় তার ঘরের বাহিরের দেয়ালে চিত্রিত করেছে নৌকা প্রতিক ও লেখা আছে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।
সমলা খাতুন বলেন, ‘হাসিনা যে ঘর দিছে এটাতে যে হুততারি (শুইতে পারি) এটাই তো বড়। যে নেত্রী ঘর দিয়েছে তার ছবি থাকবে না। তাঁর নুন খাই তার গুণ গাই।’
সুফিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার এক পুত আর দুই ছেরি লইয়া মাইনসের জায়গাত ঘর বাইন্ধা থাকতাম। নিজের ঘর নাই দেইক্কা বড় ছেরিডার বিয়া খালি ভাইঙ্গা যাইতো। শেখ হাসিনা আমগরে এইহানো ঠাই দিছে। হের পরে ছেরি ডারে বুঝমতো বিয়া দিতারছি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল মহোদয়ের পরামর্শে আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোতে যাচাই বাছাই করে প্রকৃত উপকারভোগীদের আমরা ঘর দিয়েছি।`
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য ফামহী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি দেশ ও জন কল্যাণমুখী। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের পাশাপাশি লাখো অসহায় নিরাশ্রয় পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। এ জন্যই আওয়ামী লীগ সরকার বার বার দরকার।`
সবুজ/এআরএস