দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহতের ঘটনার দুদিন পর মামলা

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩, ০৩:৪৫ পিএম
দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহতের ঘটনার দুদিন পর মামলা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গত বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে  গরুতে পাট ক্ষেত খাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায়  দুই কৃষকের মৃত্যু ঘটনার দুদিন পর শুক্রবার থানায় হত্যা মামলা করেছে নিহতের ছেলে। হত্যাকান্ডের পর পরই পুলিশ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করলেও এখনও অধরা রয়ে গেছে হত্যাকান্ডের মুল হোতা উজ্জল সর্দার।

এদিকে স্থানীয় সাংসদ সরওয়ার জাহান বাদশা উজ্জল সর্দার এ হত্যাকন্ডে জড়িত ছিলনা দাবী করে উজ্জল সর্দার কে বাঁচাতে চাইছেন বলে দাবী করেছেন মামলার বাদী নাহিদ হোসেন। 

দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, মরিচার ভুরকাপাড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় ২ জন নিহতের ঘটনায়  নিহত বজলু মালিথার ছেলে নাহিদ হোসেন বাদী হয়ে ১৬ জুন রাতে উজ্জল সর্দার সহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জন কে আসামী করে থানায় মামলা করেছে। মামলা নং ৫৩ তারিখ ১৬/০৬/২০২৩।  

এর আগে ১৫ জুন উজ্জ্বল সর্দারের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমানে দেশি অস্ত্র সহ একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় উজ্ঝল সর্দারের নামে অস্ত্র আইনে মামলা করে পুলিশ। 

গত বুধবার বিকালের দিকে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভুরকাপাড়া গ্রামের হাটখোলাপাড়া এলাকায় বজলু মালিথার জমিতে সরদার গ্রুপের ফরিদ খশরুর গরু পাট খেয়ে ফেলে। এ নিয়ে দুক্ষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। গরুতে পাট খাওয়াকে কেন্দ্র করে এক পর্যায়ে সরদার গ্রুপের লোকজন উজ্জ্বল সর্দারের নেতৃত্বে মালিথা গ্রুপের ওপর হামলা করে। সর্দার গ্রুপের লোকজন গুলি করে,  কুপিয়ে ও এলোপাথাড়ি মারপিট করে। এতে ভেলশ মালিথা ও বজলু মালিথার মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন গুরুতর আহত হয়। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ হত্যাকান্ডের পর স্থানীয় সাংসদ সরওয়ার জাহান বাদশা‘র ঘনিষ্ঠ ও ব্যবসায়ীক পার্টনার হিসাবে পরিচিত উজ্জল সর্দার কে মামলা থেকে বাঁচাতে সংসদ সদস্য ঐ দিনই সংবাদ মাধ্যম কে বলেছিলেন উজ্জল এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয় এবং ঘটনার সময় উজ্জল এলাকায় ছিলনা। কিন্তু উজ্জল সর্দার কে অস্ত্র হাতে এ হামলায় নেতৃত্ব দেবার সত্যতা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।

মামলার বাদী নাহিদ হোসেন জানান, এক সময়ের বিএনপি‘র ক্যাডার ছিল উজ্জল ও চরাঞ্চলের ত্রাস ক্রসফায়ারে নিহত লালচাঁদ বাহিনীর সক্রিয় সদস্য এবং বর্তমান এমপি সাহেবের আশ্রয়ে থাকেন বালুখেকো, মাদক ব্যবসায়ী উজ্জল সর্দার। এমপি‘র তদ্বিরে হয়েছেন শ্রমিকলীগের নেতা। তাই এমপি সাহেব তাকে বাঁচাতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মরিচা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহ আলম জানান, বিএনপি‘র ক্যাডার উজ্জল আওয়ামীলীগে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। দলের নাম ভাঙিয়ে সে বিশাল ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলে পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকার বালু তোলা সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।

দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এঘটনায় পুলিশ ৭ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ কারা হয়েছে। উজ্জল সহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

এদিকে সংসদ সদস্য সরওয়ার জাহান বাদশাহ উজ্জল সর্দার এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয় দাবী করে জানান, সামনে নির্বাচন তাই প্রতিপক্ষরা সুযোগ নেবার চেষ্টা করছে। উজ্জলের লোকজন হয়ত জড়িত ছিল। কিন্তু উজ্জল সেখানে উপস্থিত ছিলনা। একটি ভিডিও বার্তায় সংসদ সদস্য আরো জানান, কিছু মিডিয়া তার বক্তব্য আংশিক প্রচার করেছে।

আরএস