সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়ার অধিন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ফোর লেনের কাজ ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবার কথা থাকলেও আইনের জটিলতায় সম্পন্ন কাজ শেষ হচ্ছেনা। কুষ্টিয়ার জগতি মৌজার বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজের সামনে ৯৯ শতক জমি নিয়ে উচ্চ আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ৪৫০ মিটার রাস্তা নির্মানে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই স্থানের কাজ বন্ধ রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম আজাদ খাঁন জানান, উক্ত স্থানের জমি জেলা পরিষদ তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। যে কারনেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়া উক্ত স্থান দিয়ে ফোর লেনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কাজ চলাকালে মো. রেজাউল হক দিং উক্ত জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মানের বাঁধা দিচ্ছে।
তিনি বলেন আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আইনের মাধ্যমে যদি ওই জায়গা আমরা পায় তখন বন্ধ ৪৫০ মিটার রাস্তা বন্ধ কাজ পুনরায় নির্মান করা হবে। যেহেতু হাইকোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে সেহেতু আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। তিনি বলেন, আমাদের প্যানেল আইনজীবীরা এ বিষয়ে হাইকোর্টে কাজ করছে আদেশ পেলে ব্যবস্থা নিব।
এদিকে জমির মালিক মো. রেজাউল হক বলেন, এই ৯৯ শতক জমির দাবি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ২০০৩ সালে আমার পিতা আজিজুল হক এর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। সে সময় উক্ত মামলার নথিপত্র যাচাইবাছাই করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষে প্রমানিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।
পরবর্তীতে জেলা জজ আদালতে আপিল করা হলে সেখানেও মামলা খারিজ হয়ে যায়। আপিল মামলা নং ২২৬/২০০৩। এক পর্যায় ২০১৮ সালে এই আপিল মামলা হাই কোর্টেও খারিজ হয়ে যায়। ২০২১ সালের ১২ মে তারিখে মো. রেজাউল হক দিং তাদের ৯৯ শতক জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মান না করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়াকে চিঠি দেন।
তার পরেও উক্ত দপ্তর তাদের চিঠিকে অবজ্ঞা করে জোরপূর্বক ফোর লেনের কাজ শুরু করেন। ঘটনা জটিল হয়ে পড়লে মো. রেজাউল হক দিং কুষ্টিয়া সদর সহকারী জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করলে এখানে তারা ন্যায় বিচার না পেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সে সময় হাইকোর্ট তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারী করেন।
তিন মাস পার হয়ে গেলে পর পর ৩ দফায় এক বছর করে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন বিজ্ঞ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের মামলা নং ৩৪৭৪/২২। মো. রেজাউল হক বলেন, সি এস খতিয়ান নং ২৭ এর ৭০৪, ৭০৫, ৭০৭ ও ৭০৮ দাগের জমি ছিল তৎকালীন জমিদারদের।
পরবর্তীতে এস এ খতিয়ান নং ৩১ এর ৭০৪ ও ৭০৫ নফির উদ্দিন নিকারী প্রজার ওয়ারিস হিসেবে আজগর আলী চৌধুরী, আনোয়ার আলী চৌধুরী ও সোহরাব আলী চৌধুরী ৯৯ শতক জমির মালিকানা পান। ওই সম্পত্তি ১৯৮০ সালে খরিদ করেন আজিজুল হক দিং। ২৩/০৭/১৯৮০ সালের দলিল নং-১০৪৪১, ১০২৩২, ১০২৩৩ ও ১০২৬২। এর মধ্যে ১০২৬২ দলিলে কিছু অংশ বিক্রি করা হয়।
আজিজুল হক দিং তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি নামজারীও করেন। যার আর এস খতিয়ান নং ৪৪ দাগ নং ৭৯৯ এ দেখা যায় জমির ৯৯ শতক আজিজুল হক দিংদের। এই আইনের জটিলতায় পরে কুষ্টিয়া- ঝিনাইদহ মহাসড়কের বিআরবি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজের সামনে ৪৫০ মিটার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে একই আর এস খতিয়ানের ৮০১ দাগের ৬৮ শতক জমি কুষ্টিয়ার এলএ শাখা অধিগ্রহন করে বিসিককে হস্তান্তর করে। বিসিক আবার উক্ত ৬৮ শতক জমি শিল্প নগরীর প্রসার ঘটানোর জন্য বিআরবির নিকট হস্তান্তর করেন। যা এখন বিআরবি ভোগদখলে রয়েছেন।
এইচআর