উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদী থেকে গত ৮/১০ দিন যাবৎ রাত ও দিনে চলছে সরকারি বালু লুটের মহাউৎস। একটি সেন্ডিকেট প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, উপজেলার সম্ভুপুরা ইউনিয়নের চরকিশোরগঞ্জ জনবহুল এলাকার গ্রাম ঘেষা মেঘনা নদী থেকে চলছে এ বালু লুট। ইতিপূর্বে এলাকাবাসী আন্দোলনের ফলে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বালু কাটা বন্ধ করেছিলো উপজেলা প্রসাশন। এখন কোনো এক অদৃশ্য কারনে আবারো শুরু হয়েছে এ বালু কাটার অভিনব কৌশল।
চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় রয়েছে একটি বড় বাজার, দুটি উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাদরাসা ও মিনি কক্সবাজার নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র।
বালু উত্তোলন বন্ধ করে এ প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করা এখন খুবই জরুরি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সাবেক ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ছেলে রাসেল মিয়া চরকিশোরগঞ্জ ও চরহোগলা এলাকায় নদীতে চাঁদাবাজি ও ড্রেজারের মাধ্যমে অবৈধ বালু
উত্তোলনের দায়িত্ব নিয়েছে। রাসেল মিয়ার সঙ্গে রয়েছে ৩০-৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের অবৈধ উপার্জনের টাকা স্থানীয় প্রশাসনেরঅনেকের পকেটেই যায়।
সরেজমিন মেঘনা নদীর চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদী তীরবর্তী কৃষি জমির পাশে শক্তিশালী ১০/১৫ টি শক্তিশালী ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজারে তেল সরবরাহ করার জন্য সার্বক্ষণিক একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিনচালিত আরো দুটি নৌকায় ১০-১৫জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সার্বক্ষনিক পাহারায় রয়েছেন। যাতে কেউ বালু উত্তোলনে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
বালু উত্তোলনে নেতৃতে থাকা রাসেল মিয়া জানান, আমরা মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে বালু মহাল ইজারা নিয়ে বৈধভাবেই বালু উত্তোলন করছি। আমরা অবৈধভাবে কোনো বালু উত্তোলন করছি না।হয়তো কাটতে গিয়ে লেবাররা ভুল করে সোনারগাঁওয়ের সীমানায় ঢুকে যায়।
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে নদীতে বালু উত্তোলনসহ কিছু লোক অনেক অপকর্মই করে থাকেন। বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে বালু কাটার বিষয়টি শুনেছি, সহকারী কমিশনার ভুমি ইব্রাহিম মিয়াকে ব্যবস্হা নেয়ার জন্য দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জানান,মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি নৌপুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি সেখানে অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের আটক করার জন্য। অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরএস