ডেঙ্গুর কাছে অসহায় পটুয়াখালীবাসী গ্রামপর্যায়ে ছড়িয়ে পরার কারণে সংশ্লিষ্টরা অনেকটায় অসহায় আত্ম সমার্পণ করেছেন ডেঙ্গুর কাছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮০ থেকে ১০০ মধ্যেই উঠানামা করছে। ইতোমধ্যেই চলতি সপ্তাহে চারজন মারাও গেছেন।
তারা হলেন— মো. আজিজ (৬০), মির্জাগঞ্জের কাঠালতলীর লালবড়ু (৬০), পটুয়াখালী শহরের কাঠপট্টি এলকার হাবিবা (২৮) এবং আমতলীর অঞ্জলি রানী (৫০) যা চলতি মৌসুমে প্রথম ৪টি মৃত্যুর ঘটনা।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী জেলায় গত ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৭১৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে ৩ হাজার ৪৭২ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ২৪৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জন রোগী পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। যা হিসেবে সব থেকে কম সংখ্যক রোগী। এর আগের দিনগুলোতে প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত রোগী ওঠানামা করেছে। এত সংখ্যক রোগী সামলাতে চিকিৎসকরাও দিন রাত এক করে কাজ করছেন। কিন্তু তারপরও কোনো কিছুতেই যেন পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না।
ডেঙ্গুর চোখ রাঙানিতে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা এখন সতর্ক থাকতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণের মতো কিছু কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পরেছেন। কারণ হলো শহরের চেয়ে ডেঙ্গু এখন গ্রামাঞ্চলে বেশি। শহরে মানুষকে সতর্ক করা গেলেও গ্রামে সতর্ক করলেও লাভ নেই।
এখন বর্ষা মৌসুম হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল-নালা বাড়ির আশপাশে পানিতে টইটুম্বুর। সেখানকার মানুষ কতটাইবা সতর্ক হবেন। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের এমন অসহায় আত্মসমার্পণ।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন অফিসের শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেয়া তথ্য অনুযায়ী পটুয়াখালীতে মোট ২৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১৫ জন, দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৪ জন, বাউফলে ১৯ জন, গলাচিপায় ২০ জন, মির্জাগঞ্জে ৩৫ জন, দুমকিতে ১২ জন ও কলাপড়ায় ১১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
আক্রান্তরা সবাই পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলা গ্রামের মানুষ। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গুরোগীদের ভিড়ে সাধারণ চিকিৎসা অনেটাই বন্ধ প্রায়। শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় তাদের হাসপাতালের মেঝে ও প্যাসেজে ফ্লোরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগীর কারণে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রোগীরা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন সকালে একবার চিকিৎসক আসেন। বাকি সারাদিনে আর কোনো ডাক্তার থাকে না। শুধু মাত্র ইর্ন্টানি ডাক্তারা মাঝেমধ্যে আসে।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন এসএম কবির হাসান জানান, ডেঙ্গুর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগ নিরলস কাজ করেছে যাচ্ছে।
এইচআর