ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে কয়েক কোটি টাকা লাভের স্বপ্ন বুনছেন হাজারো কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, হাওরবেষ্টিত নাসিরনগর উপজেলা থেকে এবার বাজারজাত হবে অন্তত ২১ কোটি টাকার টমেটো। তাছাড়াও সমস্ত জেলায় এবার ৫০ কোটি টাকার টমেটো ক্রয়বিক্রয় হবে। টমেটো আবাদে কর্মসংস্থানর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে কয়েকশ মানুষের।
বর্ষা মৌসুমে উপজেলার চারদিকে পানি থাকার কারণে স্থানীয় দরিদ্র বাসিন্দারা বেকার থাকে। নাসিরনগরে এ বছর পতিত প্রায় ৫৩ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে আর বেসরকারিভাবে লক্ষ্যমাত্রা আরও বেশি হবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
আবাদকৃত টমেটো বাগানগুলোর বেশির ভাগই বাড়ির আঙিনায়। এসব বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় কয়েকশ মানুষের। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কয়েকশ কৃষক। বাগান থেকেই আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি ৮০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, শুধু নাসিরনগর থেকেই এবার গ্রীষ্মকালীন টমেটো বাজারজাত হবে অন্তত ২১ কোটি টাকার। খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন মৌসুমী ফসল উৎপাদন এবং ফলন বাড়াতে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।
উপজেলার কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, অনেক মানুষ কাজ করছেন টমেটো জমিতে। কেউ সুতা দিয়ে গাছ বাঁধছেন, কেউ ঘাস পরিষ্কার করছেন, কেউ আবার ওষুধ ছিটাচ্ছেন। টমেটোর ক্ষেতগুলোতে শতাধিক শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। জমির মালিকের কাছ থেকে চুক্তিতে জমি নিয়ে টমেটো চাষ করছেন আবার অনেকেই।
উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা মেলে টমেটো চাষি হাশিম মিয়ার (৮৫)। এ সময় তিনি তিন ছেলেকে নিয়ে জমি থেকে পাকা টমেটো তুলছিলেন।
হাসিম মিয়া জানান, সারা বছর এই জমি পতিত থাকতো। হঠাৎ করে কয়েক মাস আগে কৃষি অফিস থেকে একজন লোক এসে বলেন গরমের মাঝেও টমেটো চাষ করা যায়। পরে তাদের পরামর্শ মতে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে জমিতে টমেটো লাগাই। এখন পর্যন্ত দুই লাখ টাকার টমেটো বিক্রয় করেছি। আশা করছি আরও দেড় লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করা যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, নাসিরনগরে এ বছর প্রায় ৫৩ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। অন্তত ২১ কোটি টাকার কেনাবেচা হবে। স্থানীয় সবজি পাচ্ছেন এলাকাবাসী। চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। আগামী বছর এ উপজেলায় আরো টমেটো চাষীর সংখ্যা বাড়বে বলে আশাবাধ ব্যাক্ত করেন এ কর্মকর্তা।
হান্নান/এআরএস