ফেনীতে পুলিশ দম্পতিকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩, ০৫:৪৬ পিএম
ফেনীতে পুলিশ দম্পতিকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

ফেনীতে এক পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এতথ্য জানান,পুলিশ সুপার মো.জাকির হাসান। ঘটনার এক মাসের মধ্যে দূর্বৃত্তদের শনাক্ত ও জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা,ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী। 

ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অপহরণের শিকার দম্পতির বাড়ি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানায় হলেও পুলিশে চাকুরীর সুবাধে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানায় বসবাস করেন তারা।

গত ২৮ আগস্ট তারা ফেনী শহরের বিরিঞ্চি এলাকার এক হুজুরের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসা শেষে বিকালে চট্টগ্রামে মাজার জেয়ারতের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রীবেশে থাকা আরো ৫ জনের সাথে একটি মাইক্রোবাসে মহিপাল থেকে উঠেন পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রী। 

গাড়ীটি লালপোল পৌঁছলে স্বামীর চোখ-মুখ বেঁধে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে দূর্বৃত্তরা। তাৎক্ষনিক পকেটে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা, ৪২ হাজার টাকা মূল্যের দুটি স্যামসাং ও একটি নকিয়া মোবাইল ফোন, ৬ হাজার টাকা মূল্যের হাতঘড়ি, ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের একজোড়া কানের দুল হাতিয়ে নিয়ে যায়।

একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যকে লোহার রড় দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে আরো ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। তাদের নির্যাতনের মুখে বিকাশের মাধ্যমে আরও ৮০ হাজার টাকা এনে দেয়ার পর রাত ১০টার দিকে লালপোল এলাকায় দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। পথচারীদের সহায়তায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে তারা ভর্তি হন।

এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যের স্ত্রী হনুফা বেগম বাদি হয়ে ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ক্লুলেস মামলাটির রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা মো: আলমগীর হোসেন গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় তিনজনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। 

এরা হলেন- বরগুনা জেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট তালতলী এলাকার লতিফ মিয়ার ছেলে মো: চাঁন মিয়া (৫০), বড়বগি ইউনিয়নের রিতুল বাড়িয়া এলাকার জব্বার হাওলাদারের ছেলে হেকিম হাওলাদার (৪০) ও বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার বোদারপুর ইউনিয়নের মধ্য ভুতুরদিয়া এলাকার জামাল হোসেন খাঁনের ছেলে মকিবুল হাসান (৩০)। 

এসময় গ্রেপ্তারকৃত একিন হাওলাদারের নিকট থেকে মুক্তিপনে আদায়ের সাড়ে ৩ হাজার টাকা ও অন্যদের কাছ থেকে লুন্ঠিত তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্ত:জেলা অপহরণ চক্রের সদস্য।দেশের বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়ক মহাসড়কে যাত্রীর ছদ্মবেশে লোকজকে নিজেদের গাড়ীতে তুলে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপন আদায় করে তারা।বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে মাদক, চুরি-ডাকাতি সহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এআরএস