ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গেল ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি ৮৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে উপজেলার ৬ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলো হলো- উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা, জিগাবাড়ি, পঞ্চানন্দ পলাশতলা, বেলকা নবাবগঞ্জ ও কিশামত সদর, হরিপুর ইউনিয়নের চর চরিতাবাড়ি, মাদারিপাড়া, পাড়া সাদুয়া, কানিচরিতা বাড়ি, রাঘব, কারেন্ট বাজার, কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামেরচর, কাজিয়ারচর, পোড়ার চর, কেরানির চর, রাজার চর, মিন্টু মিয়ার চরসহ তারাপুর, চন্ডিপুর ও কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, উজানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তায় হু হু করে পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, বন্যার এই পূর্বাভাস পাওয়ার পর (৪ অক্টোবর) বুধবার থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন তিস্তা নদীবেষ্টিত চর ও নিচু অঞ্চলের মানুষকে দ্রুত উঁচুস্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় মসজিদ থেকেও চলেছে মাইকিং। বন্যার এই পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে জরুরি সভাসহ সমূহ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা দুর্যোাগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ভারতের সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সম্ভাব্য বন্যার হাত থেকে তিস্তা নদীবেষ্টিত ৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপজেলার নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, বসতবাড়ি, গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলার তালুক বেলকা গ্রামের জিয়াউর রহমান বলেন, তিস্তায় আকস্মিকভাবে পানি বাড়ছে। এতে ফসলের অনেক ক্ষতি হবে। বিশেষ করে ধান আর সবজির বেশি ক্ষতি হবে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের কাজিয়ার চরের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, কাল রাত থেকে অনেক পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙনও শুরু হয়। গত কয়েকদিনে অনেক আবাদি জমি নদীতে ভেঙে গেছে। ভাঙন এখনো অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। আকস্মিক পানি বাড়ায় চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, বসতবাড়ি, গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
সুমন/এআরএস