চৌগাছায় দেড় লাখ ছাগল-ভেড়াকে দেওয়া হচ্ছে পিপিআর টিকা

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৩, ০৬:২৭ পিএম
চৌগাছায় দেড় লাখ ছাগল-ভেড়াকে দেওয়া হচ্ছে পিপিআর টিকা

যশোরের চৌগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একিট পৌরসভার প্রায় দেড় লাখ ছাগল-ভেড়ার বিনামূল্যে পিপিআর রোগ প্রতিরাধে টিকা প্রদান করা হয়েছে। পিপিআর টিকা রোগ নির্মুল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের মত চৌগাছায়ও এ টিকা দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনোয়ারুল করিম জানান, ৩০ সেপ্টেম্বর টিকা প্রদান কর্যক্রমের উদ্বোধন করেন চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান ড. মোস্তানিছুর রহমান। ১ অক্টোবর থেকে ব্যাপক ভবে গ্রামে গ্রামে গিয়ে এ টিকা দেওয়ার কাজ চলছে। এ কার্যক্রম চলেব ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মোট ছাগল রয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার তিনশোটি, ভেড়া রয়েছে প্রায় একশোটির মত। তিনি আরো বলেন ১০৮ টি ওয়ার্ডে মোট ১২টি টিমে ৩৬ জন মাঠকির্ম টিকা প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, উপেজলার ১ নং ফুলসারা ইউনিয়েন ছাগলের সংখ্যা রয়েছে ১৫ হাজার ৯ শো ৯২টি। এসব ছাগলের টিকা দেওয়ার জন্য কাজ করছে এআই টেকনিশিয়ান তাইজুল ইসলাম, এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি কুলসুম খাতুন ও ভলেনটিয়ার ভ্যাকসিনিটর হাফিজুর রহমান। ২নং পাশাপোল ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে ১১ হাজার ৮৬টি এবং ভেড়া রয়েছে ১৪টি। এসব ছাগল ভেড়ার টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে তিনজন মাঠকির্ম।

তারা হলেন- এক্স এনএটিপি রফিকুল ইসলাম, এলডিপি প্রকেল্পর এলএসপি জুয়েল রানা ও ভলেনটিয়ার ভ্যাকসিনিটর মনজুর রশিদ। ৩ নং সিংহঝুলি ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে ৭ হাজার ৪২৮ টি এবং ভেড়া রয়েছে ৯ টি। এ ইউনিয়নে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই টেকনিশিয়ান আব্দুল কাদের, ভলেনটিয়ার ভ্যাকসিনিটর শাহিন আক্তার ও এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি আশাদুজ্জামান। ৪ নং ধুলিয়ানী ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে ৭ হাজার ৮৮৬ টি। এ ইউনিয়নে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই টেকনিশিয়ান আনোয়ার হোসেন, পাবলিক হেলথ সার্ভিস এর এফএফ শিমুল হোসেন ও ভলেনটিয়ার ভ্যাকসিনিটর আব্দুল লিতফ।

৫ নং চৌগাছা ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে ৬ হাজার ৩৬৩ টি। এ ইউনিয়নে যারা টিকা কার্যক্রম চালাচ্ছেন তারা হলেন এআই টেকনিশিয়ান জহুরুল ইসলাম, প্রাণি পুষ্টি প্রকল্পের সিএ রায়হান হোসেন ও এনএটিপি প্রকল্পের মহিদুল ইসলাম। ৬ নং জগদীশপুর ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে ১৩ হাজার দুইশো পঁচিশটি।

এ ইউনিয়নে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই টেকনিশিয়ান হাবিবুর রহমান, এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি মোজাম্মেল  হক ও ভলেনটিয়ার ভ্যাকসিনিটর আব্দুর রশিদ। ৭ নং পাতিবলা ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে সাত হাজার আটশো ৭৬ টি এবং ভেড়া রয়েছে ২০ টি।

এ ইউনিয়নে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই  টেকনিশিয়ান ওলিয়ার রহমান, এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি জাহিদুর রহমান এবং ভলেনটিয়ার ভেকসিনিটর মজনুর রহমান।

৮ নং হাকিমপুর ইউনিয়নে ছাগল রয়েছে  প্রায় ১২ হাজার। এ ইউনিয়নে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই টেকনিশিয়ান মফিজুর রহমান, এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি জাকির হোসেন ও  ভলেনটিয়ার আলমগীর হোসেন।

৯ নং স্বরুপদাহ ইউনিয়েন ছাগল রয়েছে ১৫ হাজার দুইশো ও ভেড়া রয়েছে ৪৩ টি। এ ইউনিয়নে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এক্স এনএটিপি আজহারুল, একই প্রকল্পের আব্দুল কাদের ও মেহেদী হাসান। ১০ নং নারায়ণপুর ইউনিয়নে ছাগল রয়েছ প্রায় ১৬ হাজার।

এ ইউনিয়নে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই টেকনিশিয়ান আছির উদ্দিন, এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি শাহানুর হোসেন ও ভলেনটিয়ার ভেকসিনিটর সালাহ উদ্দীন। ১১ নং সুখপুকুরিয়া ইউনিয়েন ছাগল রয়েছে ১৬ হাজার সাতশো ৪৩টি এবং ভেড়া রয়েছে ২০ টি। এ ইউনিয়েন টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এআই টেকনিশিয়ান আলাউদ্দিন, এলডিপি প্রকল্পের এলএসপি জাকির হোসেন ও ভলেনটিয়ার ভ্যাকসিনিটর আলমগীর হোসেন।

এছাড়া চৌগাছা পৌরসভায় ছাগল রয়েছে ১২ হাজার তিনশো ৯৭ টি এবং ভেড়া রয়েছে ২ টি। পৌরসভায় টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এলডিপি প্রকল্পের এলএফএ এহসানুর রহমান ও ইমরান হোসেন এবং এক্স এনএটিপি প্রকল্পের এফ এ মোমিন উদ্দীন।

চৌগাছা উপজেলা প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারন কর্মকর্তা ডা. মাহফুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ৫৫ হাজার টিকা হাতে পেয়েছি সেগুলো প্রয়োগ করা হয়েছে। বাকি টিকা পাওয়ার জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করিছ খুব দ্রুত বাকি টিকা হাতে পাবো।

উপজেলা প্রাণী স¤পদ কর্মকর্তা ডা. আনোয়ারুল করিম জানান,  টিকা কার্যক্রম নিবিড় ভাবে বাস্তবায়েনর জন্য ইতিমধ্যে যশোর জেলা প্রাণী স¤পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক ও প্রাণী স¤পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান  উপজেলার মাঠ পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন।

পিপিআর টিকা প্রদানের ব্যাপারে জানেত চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান বলেন, ছাগলের পিপিআর রোগটি খুবই মারাত্মক। আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রচুর ছাগল মারা যায় এই রোগে। বর্তমান সরকার পিপিআর ও ক্ষুরারোগ নির্মলের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সেই প্রকল্পের আওতায় চৌগাছা উপজেলার প্রায় দেড় লাখ ছাগল ভেড়ার টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমি আশাকরি প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে দেশ থেকে পিপিআর রোগ নির্মুলে যথাযথ ভূমিকা রাখেব।

এআরএস