ভৈরবে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে পণ্ড, জরিমানা ৪০ হাজার

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম
ভৈরবে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে পণ্ড, জরিমানা ৪০ হাজার

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ হস্তক্ষেপে একটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এসময় কনে ও বর পক্ষকে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আজ সোমবার দুপুরে শহরের পঞ্চবটী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কনে নিঝুম আক্তার স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিমের উপস্থিতিতে কনের বাড়ির লোকজন গেইট ও প্যান্ডেল খুলে ফেলেন।

জানা যায়,  পঞ্চবটী এলাকার বাসিন্দা মো. জামাল হোসেন ও মাতা নিতু আক্তার পপির ১৪ বছর বয়সী কন্যা পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া নিঝুম আক্তারের সাথে একই এলাকার বেনু মিয়ার কিশোর ছেলে রাব্বিনের সাথে আজ সোমবার দুপুরে পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে বেলা দেড়টার দিকে বিয়ে বাড়িতে ছুটে যান ইউএনও মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ। ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম পৌঁছালে স্থানীয় নারীপুরুষ এসে ভীড় জমান। ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবর পেয়ে কনেকে অন্য বাড়িতে নিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে কনের অভিভাবকদের সাথে কথা বললে প্রায় আধাঘণ্টা পর কনেকে নিয়ে আসা হয় বিয়ের আসরে। পরে বর ও বরের অভিভাবকদের আনা হয়।

ইউএনও বাল্য বিয়ের কারণ জানতে চাইলে দুই পক্ষই তাদের ভুল স্বীকার করে এবং সরকারি আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা দেন। বাল্যবিয়ের অপরাধের দায়ে ২০ হাজার করে কনে ও বর পক্ষকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার  মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন,  ভৈরবের পঞ্চবটী গ্রামে বাল্যবিবাহ দেয়া হচ্ছে এমন খবর পাই তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা নিশ্চিত হই। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে একই এলাকার এক কিশোরের সাথে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। দুই পরিবারকে ২০ হাজার করে চল্লিশ হাজার টাকা জরিমানা করি। এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নেয় তাদের বয়স আটারো ও একুশ না হওয়া পর্যন্ত যেন বিবাহ না দেয়া হয়। সরকার আইন করেছে ছেলের বয়স একুশ ও মেয়ের বয়স আটারো না হলে কোন ভাবেই যেন বিয়ে দেয়া না হয়। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমরাও সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি। এ বয়সে বিয়ে দিলে ছেলে মেয়ে উভয় শারীরিক ও মানুষিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি আমাদের সমাজের জন্য বাজে খবর। আমরা চাই আপনাদের ছেলে মেয়েকে পড়াশোনা করান এবং উপযুক্ত বয়স হলেই যেন বিবাহ দেয়া হয়।

এসময় সঙ্গে ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সাগর হোসেন সৈকত, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার শামসুন নাহার তাসনিম।

এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগীতা করেন ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক মো. শহিদুর রহমানসহ পুলিশ সদস্য মো. রতন মিয়া।

এআরএস