নীলফামারীর জলঢাকায় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী বিতরণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর অর্চনা রানী মন্ডলের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক নেতারা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর অর্চনা রানী মন্ডলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘটনায় উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সম্পাদক।
অভিযোগে জানা যায়, জলঢাকা উপজেলায় চলমান ৪০টি ব্যাচে মোট ১২’শ শিক্ষককে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা উপকরণ দিতে প্রশিক্ষণার্থী প্রতি এক হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে মানসম্মত ব্যাগ, খাতা কলম, আকর্ষণীয় ডায়েরি, তথ্যপত্র, চার কালারের সুন্দর সার্টিফিকেট প্রদানের নিয়ম থাকলেও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর অর্চনা রানী মন্ডল অত্যন্ত নিম্নমানের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করছেন।
ফলে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত ৬ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত জলঢাকা মডেল পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে নিম্নমানের ব্যাগসহ শিক্ষা উপকরণ দেওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং অনেকে এসব নিম্নমানের সামগ্রী ফেরত প্রদান করেন।
এ নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা গত ৬ নভেম্বর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টরের সঙ্গে কথা বলতে গেলে শিক্ষক নেতাদের উপর চড়াও হন অর্চনা রানী মন্ডল।
এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
পরে ১৭ জন শিক্ষক নেতার নাম উল্লেখ করে একই দিন বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর অর্চনা রানী মন্ডল।
বগুলাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মিতালী আক্তার বলেন, ‘আমি ১৫ ব্যাচে ৬ থেকে ৮ নভেম্বর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। শেষের দিন ব্যাগসহ যে সকল উপকরণ দেওয়া হয়েছে বরাদ্দ অনুযায়ি তা নিম্নমানের। এ সময় অনেকে ব্যাগ ফেরত দিতে হৈহুল্লোর করেন।’
২১ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা দক্ষিণ গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য উপজেলার থেকে আমাদের উপজেলায় বরাদ্দ অনুযায়ি নিম্নমানের উপকরণ দেওয়া হয়েছে, আর নিরুপায় হয়ে আমরা তা গ্রহণ করেছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রেহেনা পারভীন বলেন, ‘নিম্নমানের উপকরণ দেওয়ার বিষয়টি প্রশিক্ষণার্থী একাধিক শিক্ষকের পক্ষ থেকে মৌখিক অভিযোগ পাই। এর প্রতিবাদ করতে রিসোর্স সেন্টারে গেলে ইন্সট্রাক্টর অর্চনা রানী মন্ডল আমাদের উপর চড়াও হন এবং নিজের অনিয়ম ও দুর্নীতি ঢাকতে পরবর্তীতে আমাদের উপর উল্টো লিখিত অভিযোগ করেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর অর্চনা রানী মন্ডল বলেন, ‘বরাদ্দ অনুযায়ি প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে।’
শিক্ষক নেতাদের নামে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করায় আমি আমার ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছি।’
জেলা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট এর সুপার মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি দেখে জানানো হবে।’
এআরএস