পরীক্ষা চলাকালীন একসঙ্গে অর্ধশত শিক্ষার্থী অসুস্থ

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৩, ০৮:২৬ পিএম
পরীক্ষা চলাকালীন একসঙ্গে অর্ধশত শিক্ষার্থী অসুস্থ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্ব কোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশত শিক্ষার্থী একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪১জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৮জন ছাত্রী ও ৩জন ছাত্র রয়েছে।

চেতনানাশক স্প্রে করার কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়েছে বলে শিক্ষক ও অভিভাবকগণ জানিয়েছেন। তবে প্রাথমিক ভাবে চেতনানাশক স্প্রের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসাদুজ্জামান।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।

সকাল ১০টায় বিদ্যালয়টির ষষ্ঠ, সপ্তম এবং নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর ১ঘন্টা পরে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মৌরিন মধু বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, মৌরিন অসুস্থ হওয়ার পরে তাকে দেখে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অসুস্থতা দেখে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর গুরুতর অসুস্থ ৪১জন শিক্ষার্থীকে স্থানীয় অভিভাবক ও জনগণের সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।

তিনি আরো বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির তৃশা অধিকারী, অতিথি বৈদ্য, কয়েল হালদার, সমা মধু, মনিষা হালদার, সেতু বাড়ৈ, অর্পিতা মধু, সঙ্গী রায়, পূজা গাইন, শ্রাবনী মধু, সাদিয়া মোল্লা, সপ্তম শ্রেণির মৌরিন মধু, তৃষ্ণা দাস, তৃশা দাস, অর্পণা ওঝা, স্বর্ণা মধু, দৃষ্টি মধু, সুবর্ণ ঢালী, সেতু বৈরাগী, সাথী মধু, মারিয়া সুলতানা, মুক্তা মধু, ঐশি মধু, রাত্রি মধু, পায়েল মধু, অমি হালদার, অর্পিতা অধিকারী, নবম শ্রেণির মিমি সরকার, সৈকত হালদার, কোয়েল গোলদার, অনামিকা মধু, অর্পিতা মধু, মহিমা চৌধুরী, টিনা বাড়ৈ, নিলয় সরকার, নিপু মধু, দ্বীপ বৈদ্য, সাথী বৈদ্য, রিয়া মধু, জুঁই হালদার, প্রমি বাড়ৈ ও শিলা মধুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মৌরিন মধু বলেন, বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর ১ঘন্টা পরে হঠাৎ করে আমার মাথা ঘুরিয়ে বমি আসে। এরপর আমি বমি করতে করতে অচেতন হয়ে পড়লে শিক্ষকগণ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

একই শ্রেণির তৃষ্ণা দাস ও সাথী মধু বলেন, মৌরিনের অসুস্থতা দেখ আমরাও মাথা ঘুরে পড়ে যাই। মৌরিনের সাথে শিক্ষক ও আমাদের অভিভাবকগণ আমাদেরকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।

শিক্ষার্থী মহিমা চৌধুরীর পিতা সুখ চৌধুরী বলেন, আমাদের ধারনা চেতনানাশক স্প্রের করে আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে অসুস্থ করা হয়েছে। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের এখানে চিকিৎসার জন্য যে সকল শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছে তারা চেতনানাশক কোন ঔষধ বা স্প্রের কারণে অসুস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছেনা। আমাদের ধারণা এটা হিস্টিরিয়া (আবেগোন্মত্ততা) জাতীয় কোন বিষয় হবে। তবে বিষয়টি আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ঘটনাটি আমি শোনার সাথে সাথে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দেখতে গিয়েছিলাম। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

এইচআর