আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ফেনীর ৩টি আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৪৪জন প্রার্থী। এদের মধ্যে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তাদের অনুগত জাতীয় পাটি, জাসদ ও নিজ দলীয় স্বতন্ত্র ডামিসহ নামসর্বস্ব আরও কয়েকটি দলের প্রার্থী মিলে মোট ৩৮ জন।
শুক্রবার (৩১ নভেম্বর) ফেনী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এরমধ্যে ফেনী -১ (ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া) আসনে ১৪ জন, ফেনী-২ (ফেনী সদর) আসনে ১০ এবং ফেনী-৩ (সোনাগাজী -দাগনভূঞা) আসনে ১৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকী ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জমা দেওয়াদের এদের মধ্যে ফেনী-১ (পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া) আসনে রয়েছেন আওয়ামী লীগের আলা উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, জাসদের শিরিন আখতার, জাতীয় পার্টির শাহরিয়ার ইকবাল পাটোয়ারী, জাকের পার্টির রহিম উল্যাহ ভূইয়া, তৃণমুল বিএনপি মো. শাহজাহান সাজু, বাংলাদেশ কংগ্রেস`র আনোয়ার কামরান মোর্শেদ ও মো. আলমগীর আলম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মাহবুব মোর্শেদ মজুমদার, বাংলাদেশ ইসলামীক ফ্রন্টের কাজী মো. নুরুল আলম, (স্বতন্ত্র) আবদুর রউফ, মিজানুল হক, তাজুল ইসলাম মজুমদার, মো. ফখরুল ইসলাম মজুমদার ও আবুল হাশেম।
ফেনী-২ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের নিজাম উদ্দিন হাজারী, জাতীয় পার্টির খন্দকার নজরুল ইসলাম, তৃণমুল বিএনপি আমজাদ হোসেন সবুজ, জাকের পার্টির নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামীক ফ্রন্টের মাওলানা নুরুল ইসলাম, খেলাফত আন্দোলনের আবুল হোসেন, বাংলাদেশ কংগ্রেস`র মোহাম্মদ হোসেন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মাহবুব মোর্শেদ, মো. নুরুল ইসলাম ভূইয়া, (স্বতন্ত্র) আনোয়ারুল করিম ফারুক।
ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) আসনে আওয়ামী লীগের আবুল বাশার ও তাঁর ছেলে ইসতিয়াক আহমেদ সৈকত ( স্বতন্ত্র) জাতীয় পার্টির লে.জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, (স্বতন্ত্র) হাজী রহিম উল্যাহ ও তাঁর স্ত্রী পারভীন আক্তার, জেড এম কামরুল আনাম, সুপ্রিম পার্টির তবারক হোসেন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরাম (পিডিএফ)`র আজিম উদ্দিন আহমেদ, জাকের পার্টি আবুল হোসেন, ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আবু নাসির ও বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশের নিজাম উদ্দিন, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের জোবায়ের ইবনে সুফিয়ান, (স্বতন্ত্র) আনোয়ারুল কবির রিন্টু আনোয়ার এবং আবদুল কাশেম আজাদ।
প্রসঙ্গত, এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের বিপরীতে অংশ নেয়া বাকি দলগুলোর ফেনীতে একজন ইউপি সদস্য হওয়ার মতো সমর্থক/ভোটারও নেই। যার প্রমাণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে জাসদের শিরিন ফেনী-১ আসন থেকে এবং ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টির লে.জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে ফেনী-৩ আসন থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
এরপরও পরবর্তীতে বিএনপি-জামাতবিহীন অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে দলীয়ভাবে অংশ নিয়ে পুরো জেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যানতো দূরের কথা এ দল দুটি থেকে একজন মেম্বারও নির্বাচিত হয়নি। প্রাপ্ততথ্য মতে, ওইসব নির্বাচনে এদুটি দলের পুরো জেলার সব কয়েকজন প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট একাত্রিত করেও আওয়ামী লীগের একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ভোটের সমান হবে না।
স্থানীয়দের দাবি এ দুটো দলমিলেও একজন ইউপি সদস্য নির্বাচিত করার মতো সমর্থক/ভোটার পুরো জেলার সমর্থকদের একত্রিত করেও যোগাড় করতে পারবেনা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নামসর্বস্ব দলগুলো থেকে মনোনয়নপত্র দাখিলের হিড়িক দেখে ফেনীর সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
আরিফুর রহমান নামে একজনতো আপসোস করে লিখেছেন এদের সাথে বউও নেই! আমাদের পাঠকদের জন্য লেখাটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো। তিনি লিখেছেন- ফেনীতে ৩৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় সব হেভিওয়েট প্রার্থীদের সাথে ছিল তাদের ‘আপন’ সহধর্মিণী।ফেনী-১ আলাউদ্দিন- ডা. আরজু, ফেনী-২ নিজাম হাজারী-নাসরিন, ফেনী-৩ আবুল বাশার- নাসরুন্নেছা, ফেনী-৩ মাসুদ উদ্দিন-জেসমিন, ফেনী-৩ হাজী রহিমউল্যাহ-পারভীন আক্তার (প্রার্থী)চাল নেই, চুলো নেই এমন হাস্যকর নিবন্ধিত অনেক দলের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছে একা একা। তাদের সাথে বউও নেই।
এআরএস