মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধির ওপর সন্ত্রাসী হামলা

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩, ০৯:১১ পিএম
মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধির ওপর সন্ত্রাসী হামলা

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার দৈনিক মানবজমনি পত্রিকার প্রতিনিধি আবু হেনা মোস্তফা কামাল এর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় চরদুঃখিয়া (পশ্চিম) ও ফরিদগঞ্জ (দক্ষিণ) ইউনিয়ন এলাকায় কয়েক বছর যাবত ডাকাতিয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছিলেন একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

রোববার পুটিয়া গ্রামে ড্রেজারে বালু উত্তোলন অবস্থায় সংবাদ সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণকালে তার ওপর প্রকাশ্যে হামলা হয়। প্রায় দেড় ঘন্টা আটক থাকার পর খবর পেয়ে পুলিশ ও সাংবাদিক উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে।

জানা গেছে, এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পেরে আবু হেনা মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি ড্রেজার পরিচালনা ও বালু উত্তোলনে জড়িতদের তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর ভিডিও চিত্র ধারণ শেষে লাইভ করছিলেন।

ওই অবস্থায় বালু উত্তোলন সিন্ডিকেট সদস্য মোশারফ ও সোলাইমান তার সামনে গিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে ভিডিও বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়। আবু হেনা মোস্তফা কামাল তাদেরকে পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার কাজে বাধা দেবেন না। আমি জনস্বার্থে দায়িত্ব পালন করছি।

লাইভ চলাকালীন সন্ত্রাসীরা তাকে টানা হেঁচড়া করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি আরিফের দোকানের সামনে আশ্রয় নেন। সেখানে তাকে নিয়ে দীর্ঘ সময় টানা হেঁচড়া করে মোশারফ ও সোলাইমান। তাদের সহায়তা করছিলো কয়েকজন। এর মধ্যে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সোহেল নামক এক সন্ত্রাসী তার বাম হাত ধরে তাকে অন্ধকারে টেনে হেঁচড়ে নেওয়ার চেষ্টা ও ফোন মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

প্রায় এক ঘন্টা যাবত সাংবাদিকের সঙ্গে তারা ধস্তাধস্তি করে। এতে, তিনি শারীরিকভাবে আহত হন। তিনি দোকানী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে সাহায্য চান। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ বাধা দিতে সাহস পাননি।

এক পর্যায়ে আবু হেনা মোস্তফা কামাল কৌশলে মোবাইল ফোনে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে কল দেন ও মোবাইল ফোনে স্ট্যটাস দিয়ে ঘটনা জানান দেন। এতে সন্ত্রাসীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বারবার মারার জন্য তেড়ে যায় ও গালমন্দ করে।

খবর পেয়ে চতুর্দিক থেকে লোকজন এগিয়ে যায়। তারা এলাকার সাবেক মেম্বার মিলনসহ নানান জনকে কল দিয়ে সাবধান করেন। পুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই পালিয়ে যায়। রাত প্রায় সাড়ে আট ঘটিকায় সবাই মিলে সাংবাদিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। রাত ১১ ঘটিকা নাগাদ থানায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়মিত মামলা রুজু হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৬ বছর যাবত স্থানীয় কাটাখালি, রণাতলী, লাড়ুয়া, পুটিয়া গ্রাম এলাকার ডাকাতিয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রির সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট সদস্যরা হলো ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম নিরু, মোশারফ ভুইয়া,তাপস জমাদার, রশিদ গাজী, সোলাইমান ও সোহেল প্রমুখ।

এ ঘটনায়, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁদপুর প্রেসক্লাব, চাঁদপুর জেলা, ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দসহ এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিগণ নিন্দা ও দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যপারে, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, মামলা রুজু করা হয়েছে। দায়ী সকলকে আইনের আওতায় নেয়া হবে। কেউ ছাড় পাবে না। দায়ীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে গেছে।

এইচআর