কিশোরগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে মারধর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছাত্রের পিতার করা মামলায় শিক্ষককে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার নগুয়াস্থ দি খিদমাহ হসপিটাল মোড় সংলগ্ন হুফফাজুল কোরআন মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগের ছাত্র শায়েরুল হক মাফি(১৫)। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টায় মাফি বিভাগে শ্রেণিকক্ষে বসে অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে দুষ্টামি করার সময় মাদ্রাসার শিক্ষক মো. ফাইজুল আমিন এসে শিক্ষার্থী মাফিকে দুষ্টামি করার জন্য নিষেধ করে সাথে সাথে মাফির কান চাপায় উপর্যোপরি কয়েকটি চড়-থাপ্পর মারিতে থাকে।
এ আঘাতের ফলে মাফি মাদ্রাসার মেঝেতে পড়ে গেলে মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ফাইজুল আমিন তার হাটু দিয়া মাফির বুকে ও পিঠে উপর্যোপরি আঘাত করে এবং মাথায়, পিঠে, কোমরে, হাতে, পায়ে লাথি মুড়া মারিয়া গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে মাদ্রাসা শিক্ষক ফাইজুল তার দুই হাত দিয়া ছাত্রের ঘাড়ে ও পায়ে ধরে মেঝে থেকে উপরে উঠাইয়া কয়েকটি আচাড় মেরে তার মাথায় গুরুতর থেতলানো জখম করে। শিক্ষকের মারপিটের ফলে ছাত্র মাফি গুরুতর ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার নাক দিয়া রক্ত পড়তে থাকে ও বমি করতে থাকে। তখন ছাত্রের ডাক-চিৎকারে মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্ররা এগিয়ে আসলে তাকে উদ্ধার করে।খবর পেয়ে মাদ্রাসা ছাত্র মাফির পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসায় গিয়ে তাদের ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পায়।
পরে মাফির পিতা ও তার ফুফু তাৎক্ষণিক ভাবে শায়েরুল হক মাফি (১৫)কে মুমূর্ষু অবস্থায় কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মাফির অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে মাফি (১৫)কে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রের পিতা মুশিদুল হক জনি বুধবার সকালে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে।
]
মামলা দায়েরের সাথে সাথেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বুধবার সকালে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ফাইজুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে দুপুরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম মস্তুফা জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার সাথে সাথেই পুলিশ অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ফাইজুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে। এদিনই তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
এআরএস