ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামে শামীম হোসেন ও মন্টু মিয়া নিহত হওয়ার নেপথ্যে ছিল স্বর্ণ চোরাকারবারির টাকা ভাগাভাগী নিয়ে দন্দ। তারা মূলত, বাঘাডাঙ্গা গ্রামের মতিয়ার রহমান মতির নিয়ন্ত্রণে থেকে স্বর্ণ পাচারের কাজে নিয়োজিত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ-বিজিবির কঠোর নজরদারি ও অব্যাহতভাবে অভিযান পরিচালিত হলেও মহেশপুর সীমান্ত এলাকায় শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামে এক স্বর্ণ চোরাকারবারীর গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহতের ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) হত্যাকান্ডের পর সীমান্ত এলাকায় এখন প্রধান আলোচনার বিষয় স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট।
এদিকে বাঘাডাঙ্গা গ্রামে স্বর্ণ চোরাচালানের টাকা নিয়ে দন্দে জোড়া হত্যা কান্ডের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পার মামলার কোন আসামী আটক হয়নি বলে মহেশপুর থানা সূত্রে জানা গেছে।
চোরাচালান সিন্ডিকেট মূলত ভাড়ায় অস্ত্র আনা নেওয়া, সোনার বার ও অবৈধ ভাবে মানুষ পাচার করে থাকে। আর এই কাজে প্রধান সহযোগী হলো সীমান্তে বসবাসকারী কতিপয় জনপ্রতিনিধি, কথিত বিজিবি সোর্স ও প্রভাবশালী কয়েক জন ব্যক্তি।
নেপা ইউনিয়নের ৮ নং বিটের এসআই জমির হোসেন জানান, তরিকুল ইসলাম আকালে ও রফিকের মধ্যে প্রায় ৬ মাস ধরে চোরাচালানের টাকা ভাগাভাগী নিয়ে দ্বন্ধ চলে আসছিল। সীমান্তে তাদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে দেড়মাস আগে নিহত শামীমকে কুপিয়ে আহত করেছিল ঘাতক তরিকুল ইসলাম ওরফে আকালে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে নিহত শামীমের পিতা শামসুল ঘাস কাটতে মাঠে যাওয়ার সময় তরিকুল ইসলাম ওরফে আকালে ও তার ভাই ইব্রাহিম এবং ভগ্নিপতি আব্দুল জলিল তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বিষয়টি বাড়ি এসে জানালে শামীম, তার চাচা মন্টু মন্ডল ও পিতা শামসুল দেশীয় অস্ত্র দা, তীরধনুক, শাফল নিয়ে আকালের বাড়িতে যায়। এ সময় আকালে তার কাছে থাকা অবৈধ পিস্তল দিয়ে গুলি চালিয়ে চাচা মন্টু মন্ডল ও ভাতিজা শামীমকে খুন করে পালিয়ে যায়। ঘটনায় শামসুল মন্ডলও গুলিতে আহত হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইটি গুলির খোসা, তীরধনুক, দা, শাফল উদ্ধার করে।
এলাকাবাসীর জানায়, তরিকুল ইসলাম ওরফে আকালে শামীম ও তার চাচা মন্টুকে হত্যা করে সম্ভবত ঐরাতেই ভারতে পালিয়ে যেতে পারে।
মহেশপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মাহবুর রহমান জানান, প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে হামলাকারী ও নিহত উভয় চোরাকারবারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তারা টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে এ হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
আরএস