মাদারীপুরে সড়কে অবৈধ যানবাহনের দাপট, ঘটছে প্রাণহানি

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম
মাদারীপুরে সড়কে অবৈধ যানবাহনের দাপট, ঘটছে প্রাণহানি

মাদারীপুরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইটভাটার মাটি, বালু ও ইটবহনকারী অনুমোদনবিহীন ট্রাক্টর (ট্রলি), মাহিন্দ্রা এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যানবাহন। এতে করে একদিকে নষ্ট হচ্ছে সড়ক অন্যদিকে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে এ ধরনের অবৈধ যানবাহন চলাচল করলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে করে ক্ষুব্ধ সাধারণ নাগরিকরা। স্থানীয়দের দাবি অবৈধ যানবাহনের মালিকরা নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে থাকে। সে কারণেই বন্ধ হচ্ছে না এই অবৈধ যানবাহন।

জানা গেছে, গত ২৮ জানুয়ারি অবৈধ মাহিন্দ্রার ধাক্কায় মাদারীপুরের কালকিনিতে মো. নেছার উদ্দিন হাওলাদার (৩৮) নামে এক আইনজীবীর সহকারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে নিহতের স্বজনেরা ও স্থানীয় জনতা সড়ক অবরোধ করে এবং ওই ঘাতক মাহিন্দ্রটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

এর কয়েকমাস আগে ডাসার থানার বালিগ্রাম ইউনিয়নের ধুলগ্রাম নামকস্থানে রেজাউল করিম বারেক নামে এক মুক্তিযোদ্ধা ইটবাহী নছিমনের ধাক্কায় নিহত হন। শুধু মুক্তিযোদ্ধা বারেক ও নেছার নয়। প্রতিনিয়তই ঘটছে এমন দুর্ঘটনা। এরপরও পুলিশের নাকের ডগা দিয়েই চলছে এসব অবৈধ যানবাহন।

সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত কয়েকশত অনুমোদনবিহীন বালু ও ইটবাহী মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টর এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চলছে সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে। এই অতিরিক্ত ওজনের মাটি, ইট ও বালু বহনের কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে জনদুর্ভোগ। ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব যানবাহনের চালকদের নেই কোনো লাইসেন্স।

মাদারীপুরের স্থানীয় বাসিন্দা সামসুল হক জানান, মাদারীপুরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহন চলাচল করে। আমরা শুনেছি এই অবৈধ যানবাহন থেকে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত অবৈধ সুবিধা পেয়ে থাকে। যার কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ যানবাহন।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ইটভাটার মাটি, বালু ও ইট বহনের ট্রাক্টরের চাকায় কোটি কোটি টাকার সড়ক নষ্ট হচ্ছে। মারাত্মক শব্দদূষণ ও ধুলাবালির প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। তাই এসব গাড়ির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান জানান, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ যানবাহনকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশের মাসোহারা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

ইএইচ