কাজুবাদাম চাষ: দামে হতাশ চাষিরা

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪, ০৩:৩৩ পিএম
কাজুবাদাম চাষ: দামে হতাশ চাষিরা

কাজুবাদাম একটি সুস্বাদু খাবার। এটি একটি অর্থকরী ফসল। কাজুবাদাম পাহাড়ে ঢালে ভালো জন্মে। এটি বীজ ও চারা থেকে লাগানো পর তিন বছরের মধ্যেই ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। কাজুবাদাম বেলে-দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার পরে কাজুবাদাম ভালো দাম পাওয়ায় এটি চাষাবাদের ওপর কৃষকদের উৎসাহী হতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে চারা, বীজ, সার ও চাষাবাদের উপর কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা থানচিতে কাজুবাদাম চাষি সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

কিন্তু, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে, নাকি কৃষি প্রযুক্তি সঠিক ব্যবহার করতে না পারার কারণে ফলন কমে যাচ্ছে তা এখনো জানা যায়নি। ফলে কাজুবাদামের ফলন কম হওয়ায় ইদানীং কৃষকদের মাঝে হতাশা লক্ষ্য করা গেছে।

এ নিয়ে কথা হয় সদর ইউনিয়নের টুকতং পাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য, কাজুবাদাম চাষি তিংপাও ম্রো সঙ্গে। তিনি আমার সংবাদকে বলেন, গত বছর বাগানের কাজুবাদামের ফুল বেশি আসলেও ফলন একেবারেই হয়নি। এর আগের বছর ১৬-১৭ মণ পেয়েছিলাম, কিন্তু গত বছর মাত্র ৮ মণ পেয়েছি।

কথা হয় বলিপাড়া ইউনিয়নের কমলা বাগান পাড়া শংকছুর চাকমা সঙ্গে। বলেন, গত বছর আমার কাজুবাদাম বাগানে প্রচুর ফুল হয়েছিল, কিন্তু ফলন একেবারেই হয় নাই। ফুলগুলো সূর্যের তাপে শুকিয়ে গিয়ে এক কেজিও পাইনি আমি।

এ নিয়ে উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাশগুপ্তর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে উষ্ণতা বৃদ্ধির পাওয়ায় শীতকালে যে বছর ঘন কুয়াশা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি বাগানের উপর পড়বে সেই বাগানের ফলন কমে যেতে পারে। মাটিতে পুষ্টি উপাদান যদি কমে যায় তাহলেও ফলন কমে যেতে পারে। তাই বছরের ৩ বার গাছের গোড়ায় সার প্রয়োগ করতে হবে। বর্ষার শুরুর আগে, বর্ষার মাঝামাঝিতে ও বর্ষার শেষে সার প্রয়োগ করতে হবে। নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। ফুল আসার আগে, ফল মটর দানা সমান বড় হলে ও ফল পরিপক্ব হওয়ার পূর্বে অবশ্যই স্প্রে করতে হবে। প্রতি বছর ফলন উত্তোলনের পর বাগান প্রুনিং করতে হবে। প্রুনিং মানে, মরা ঢাল, অবাঞ্ছিত গাছের ডালে পাল্লা কেটে দেয়া। তবেই ভালো ফলন পাওয়ার সম্ভব।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ উপজেলায় কাজুবাদাম চাষির সংখ্যা প্রায় ১২‍‍`শ জন। প্রায় ৯শত ৯০ হেক্টর জমিতে কাজুবাদাম চাষ করা হয়। গত বছর ১১হাজার ৪৫.৭০ মেট্রিক টন কাজুবাদাম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে ১৪ হাজার মেট্রিক টন।

উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরও বলেন, হতাশা না হয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শ গ্রহণের জন্য কৃষকদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সাহায্য সহযোগিতা দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছে বলেও তিনি জানান।

ইএইচ