গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া

কিশোর-কিশোরী ক্লাবে অনিয়ম, নাস্তার টাকা হরিলুট

মো. সেলিম রেজা, গোপালগঞ্জ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ১২:২৪ পিএম
কিশোর-কিশোরী ক্লাবে অনিয়ম, নাস্তার টাকা হরিলুট
প্রতীকী ছবি

গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়ায় কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো যেন অনিয়মের আখড়া। বরাদ্দের চেয়ে কম টাকার নাস্তা, উপস্থিতি কম আবার কখনো ক্লাব পুরোপুরিই বন্ধ রাখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এভাবে অনিয়ম করে প্রতিমাসে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দকৃত নাস্তার অধিকাংশ টাকা বিল ভাউচারের মাধ্যমে কর্মকর্তা কর্মচারীরা মিলে ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ক্লাবের শিক্ষক ও জেন্ডার প্রোমোটররা জানান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার নির্দেশেই ৩০ টাকার পরিবর্তে ছাত্রছাত্রীদের ২০ টাকার করে নাস্তা দেওয়া হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সরকারের অর্থ বেহাত হচ্ছে, অন্যদিকে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠনের লক্ষ ও উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের মতো কোটালীপাড়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১২টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করা হয়। প্রতি ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ৩০ জন। শিক্ষক ২০ জন (আবৃত্তি ও সংগীত)। ক্লাবগুলো দেখভাল করার জন্য মাহমুদা খানম, লিমা খানম ও রহিমা হাওলাদার নামে তিন জন জেন্ডার প্রোমোটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

উপজেলার ১২টি ক্লাবের ৩৬০ জন শিক্ষার্থীর জন্য সরকারিভাবে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে প্রতিমাসে নাস্তা বাবদ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রত্যেকের জন্য ৩০ টাকার নাস্তা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়- নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচীর নির্দেশে দীর্ঘদিন থেকে ২০ টাকার করে নাস্তা দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। হাজিরা খাতায় ৩০ জন শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও অধিকাংশ ক্লাবে উপস্থিত সংখ্যা ১০-১৫ জন। কোন কোন ক্লাবে উপস্থিতি থাকে আরও কম। কিন্তু উপস্থিতি কম থাকলেও অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের নাস্তার পুরো টাকা বিল ভাউচার করে কর্মকর্তা ও জেন্ডার প্রোমোটাররা মিলে মিশে হাতিয়ে নিচ্ছেন।

উপজেলার ১৬৫নং মধ্য হিরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাবটিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ক্লাসরুম তালা দেওয়া, স্কুল বারান্দায় ৪ জন মেয়ে ও ২ জন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। আবৃত্তি শিক্ষক শম্পা খানম আসেননি। 
শিক্ষার্থী মরিয়াম খানম জানায়, ম্যাডাম মাঝে মধ্যে আসে না। না আসলে নাস্তাও দেওয়া হয় না।

নাস্তার অনিয়মের সত্যতা শিকার করে জেন্ডার প্রোমোটার মাহমুদা খানম বলেন, অফিস থেকে ২০ টাকা বরাদ্দ। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০ টাকার নাস্তা সরবরাহ করি।

এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অ.দা.) শ্রীময়ী বাগচী বলেন, নাস্তার বরাদ্দ ৩০ টাকা থাকলেও ভ্যাট আইটি কাটার কারণে ২০ টাকার বেশি নাস্তা সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।

উপস্থিত কম থাকলে তাদের নাস্তার টাকা কী করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই টাকা দিয়ে ১৬ ডিসেম্বরসহ বিশেষ দিনে অনুষ্ঠান করে ছেলে মেয়েদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন জানান, কিশোর-কিশোরী ক্লাবের অনিয়মের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ব্যাপারে আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।

ইএইচ