টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আমজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিয়ামনি প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি।
প্রথম পরীক্ষার দিন বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রবেশপত্র না থাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে ভগ্নহৃদয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে রিয়ামনি নামে ওই শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ওই শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, কালিহাতী উপজেলার আমজানী গ্রামের প্রবাসী মো. রহিম বাদশার মেয়ে রিয়ামনি আমজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার রোল নম্বর ৪। নিয়মানুযায়ী নবম শ্রেণিতে থাকাবস্থায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং দশম শ্রেণিতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ৪ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমানের কাছে জমা দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান ছাত্রী রিয়া মনির রেজিস্ট্রেশন ও এসএসসির ফরম পূরণ কোনটিই করেননি। অথচ রিয়ামনি সহপাঠীদের সঙ্গে টেস্ট (নির্বাচনী) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এবং বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার বিদায় অনুষ্ঠানেও অংশ নেয়।
এসএসসি পরীক্ষার আগের দিন বুধবারও প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান তাকে ৫০০ টাকা নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করে প্রবেশপত্র নিতে বলেন। বুধবার অভিভাবকসহ প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়েও তিনি প্রবেশপত্র পাননি। পরীক্ষার দিন রিয়ামনি কেন্দ্রে গিয়ে প্রবেশপত্র না থাকায় পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারেনি। তাকে ভগ্নহৃদয় নিয়ে বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে।
শিক্ষার্থী রিয়ামনি জানায়, তিনি নিয়মানুযায়ী নবম শ্রেণিতে ৬ হাজার ৫০০ টাকা জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও দশম শ্রেণিতে ৪ হাজার টাকা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছেন। যথারীতি টেস্ট পরীক্ষা ও বিদায় অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপত্র চাইলে পরে দিবেন বলে জানায়। পরে আর প্রধান শিক্ষক দেখা দেয়নি এবং বার বার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। তিনি পরীক্ষার দিন জানতে পারেন- তার প্রবেশপত্র আসেনি। বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মেরী আক্তার জানান, তার মাধ্যমেই রিয়া মনি রেজিস্ট্রেশন ফি এবং ফরম পূরণের টাকা প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিয়েছে। পরীক্ষার দিন থেকে রিয়া মনির বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কোন কথা বলছেন না।
আমজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মোবাইলফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, রিয়ামনির রেজিস্ট্রেশন নবম শ্রেণিতে থাকাকালে কোনো অজ্ঞাত কারণে করা হয়নি। দশম শ্রেণিতে পড়াকালে তার প্রথম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। সে হিসেবে রিয়ামনি আগামী সেশনের পরীক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে- সেজন্য প্রধান শিক্ষক সব কাগজপত্র বাড়িতে নিয়ে রাখেন। এ বিষয়ে তিনি বেশি কিছু বলতে পারছেন না।
টেস্ট (নির্বাচনী) পরীক্ষায় রিয়ামনির অংশ নেওয়া ও সহপাঠীদের সঙ্গে বিদায় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে প্রধান শিক্ষক সব কিছু জানেন বলে দাবি করেছেন।
ইএইচ