কিশোরগঞ্জে ১২৭৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহিদ মিনার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৬:২৮ পিএম
কিশোরগঞ্জে ১২৭৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহিদ মিনার
ছবি: আমার সংবাদ

একদিন পরই একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের স্মরণে পালিত হবে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শহিদ মিনারের বেদিতে ফুল দিতে ঢল নামবে অগণিত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ঐতিহাসিক প্রতীক শহিদ মিনার। যে মিনার বাংলাদেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও আন্দোলন-সংগ্রামের সাক্ষী।

কিশোরগঞ্জ জেলার ১২৭৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো সেই শহিদ মিনার গড়ে তোলা হয়নি। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর আর স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও কিশোরগঞ্জের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার গড়ে না ওঠায় শিক্ষার্থীরা শহিদ সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানতে পারছে না। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানও করতে পারছে না। যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই তারা জাতীয় দিবসগুলোতে বাঁশ-কাগজ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে তাতেই শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিচ্ছেন। 

এ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সচেতনমহলের দাবি দ্রুত সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হোক।

জানা যায়,কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২৩২৯ টি।এর মধ্যে শহিদ মিনার রয়েছে ১ হাজার ৫০ টিতে। বাকি ১ হাজার ২ শত ৭৯ টি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই।

স্থানীয়রা জানান, যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই, তারা জাতীয় দিবসগুলোতে বাঁশ ও কাগজ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধায় ভাষাশহিদ ও সংগ্রামীদের স্মরণ করেন। আবার কেউ কেউ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। এতে দুর্ভোগসহ নানা সমস্যা হয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণের দাবি করছেন সর্বস্তরের মানুষ।
সরেজমিনে কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই।

এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অস্থায়ীভাবে শহিদ মিনার নির্মাণ করে দিবসটি পালন করে থাকেন। আবার কেউ কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন শহিদ মিনার নির্মাণ করা হলো না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে শহিদ মিনার নির্মাণে বরাদ্দের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার নির্মাণে বেসরকারিভাবে কেউ এগিয়ে আসে না। অনেক বিদ্যালয়ে জায়গা স্বল্পতার কারণে শহিদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। 

তবে তারা বলেন, ভাষাশহিদদের স্মরণ করতে পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার তৈরি করা হবে। 

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুজিব আলম বলেন,আমাদের টার্গেট হচ্ছে প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার তৈরি করা। যেকোনো উপায়ে সুযোগ থাকলে সেটি আমরা করছি। আপদত এই মুহূর্তে সুযোগ না থাকায় যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই, সেসব বিদ্যালয়ের শহিদ মিনার নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তবে বেশকিছু বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে। বাকিগুলোর জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিআরইউ