আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব না পড়লে ঝিনাইদহের মহেশপুরে এবার আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আম গাছগুলোতে থোকায় থোকায় আমের মুকুল দোল খাচ্ছে। শীতের শেষে আম গাছের কচি ডোগা ভেদ করে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে হলদেটে মুকুল গুচ্ছ যেন উঁকি দিয়ে হাসছে।
আম বাগানগুলোর শুনশান নিরবতা ভেঙে একটানা মৌমাছি যেন গুনগুন গান শোনাচ্ছে। আর আম বাগানগুলোও যেন সেজেছে অপরুপে। কয়েক দিনের মধ্যেই আমের মুকুলগুলো পরিণত হবে পরিপূর্ণ দানায়। আমের মুকুলে কৃষকের মনের স্বপ্ন দোল খাচ্ছে। সেই সোনালি স্বপ্ন বুকে ধারণ করেই আম বাগান মালিকেরা পরিচর্যা করে চলেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চাষিরা আমের বাগান করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করছেন। আম চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর কৃষকরা নতুনভাবে আমের বাগান করছেন। আমরুপালি, ল্যাংড়া, হাড়িভাঙা, মল্লিকা, থাই, গোপালভোগ, বারি-১০, বেনারশি, সিতাভোগ, এছাড়া দেশি প্রজাতির আম চাষ করেছেন চাষিরা। তবে এরমধ্যে সিংহভাগই আমরুপালি জাতের।
কৃষি সম্প্রসারণ আফিস সূত্রে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলায় ৪’শ ৫০ হেক্টর জমিতে ১১’হাজার ১’শ ২০ মেট্টিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
আম চাষের বিষয়ে কথা হয় মহেশপুর উপজেলার জলিলপুর গ্রামের আম চাষি রিপন হোসেনের সাথে। তিনি জানান, এ বছর আমের গাছ গুলোতে প্রচুর পরিমাণে মুকুল এসেছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রকার রোগ বালাই দেখা দেয়নি, আবহাওয়া ও ভাল। যদি কোন প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটে তাহলে প্রচুর পরিমাণে আমের ফলন আসবে।
উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আম চাষি গোলাম ফারুক জানান, আম গাছগুলোর যত্ন শুরু হয় বাগানের আম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই। বাগানে গাছের পুরাতন বোঁটা ভেঙে ফেলা। বাগান চাষ দেয়া। বাগানের জমিতে পাতা পরিষ্কার করা। মুকুল আসার আগে এবং পরে বাগানে ভালোভাবে স্প্রে করা।
তিনি আরও জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলেএবছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুজ্জামান জানান, আম লাভজনক ফসল। এবার আম বাগানে যে পরিমাণে মুকুল এসেছে, যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে না পড়ে তাহলে আমের বাম্পার ফলন পাবেন কৃষকরা।
তিনি আরও বলেন, এ মুহূর্তে পরিচর্যা একটু বাড়াতে হবে। আমগাছের গোড়ায় মাঝে-মধ্যে সেচ দিতে হবে। এতে গাছের কাণ্ড গুলো যেমন শক্ত থাকবে, তেমনি ফুলগুলো তরতাজা থাকবে।
ইএইচ