ঝিনাইদহের মহেশপুর-কোটচাঁদপুর সড়কে ট্রলি, আলমসাধু, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এতে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এ অঞ্চলের মানুষ।
কোটচাঁদপুর মহেশপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলাগুলো সব সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিন চাকাসহ বিভিন্ন অবৈধযান। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, মরছে মানুষ।
পরিবহন শ্রমিক-মালিকসহ স্থানীয়রা বলছেন, সড়কে অবৈধযান বন্ধে তারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তার পরও কোনো ফল মিলছে না। কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই চলছে এসব যানবাহন। এতে করে মহাসড়কে এক মহাআতঙ্ক বিরাজ করছে।
তবে পুলিশ বলছে, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন আমদানি বন্ধ না করলে এসব অবৈধযান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এগুলো আমদানি বন্ধ করতে হবে।
যশোর-কালীগঞ্জ-কোটচাঁদপুর-জীবননগর মহাসড়কের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক দ্রুতগামী বাস, ট্রাক, মিনিবাস, কাভার্ডভ্যান চলাচল করছে। এগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মালবাহী আলমসাধু ও ভটভটি। সড়কে অবৈধ ও কাগজপত্র ছাড়া মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নিলেও অবৈধ এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া খুব একটা চোখে পড়ে না।
পথচারী রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় বের হলে দেখা যায় অবৈধ যানগুলোতে শিশু-কিশোররা চালকের আসনে বসে আছে। তাদের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া অদক্ষ চালক দিয়ে এসব যানবাহন পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রশিক্ষণ ছাড়া এসব চালক দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে দুর্ভোগ। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বাস চালক সেলিম রেজা বলেন, মহাসড়কের প্রায় সবগুলো দুর্ঘটনার প্রধান কারণ এসব অবৈধযান। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে সড়কে যানবাহন চালাচ্ছি। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের চালকের কোনো প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স নেই। তাদের জরিমানাও করা হয় না। অথচ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করে ওই যানবাহনগুলো মহাসড়কে চলাচল করছে।
কালীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন জানান, অবৈধ যানবাহনের কারণে বাস চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। সড়কে থ্রি-হুইলারের বেপরোয়া গতির কারণে বাসের সঙ্গে প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে আবার বাস মালিকদেরই জরিমানা গুনতে হয়। সড়ক থেকে এসব তিন চাকার অবৈধযান সরানোর জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই।
যশোর জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দিন পাপ্পু জানান, আমরা বিগত দিনেও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিকবার বসেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে উঠবে না। অথচ হাইকোর্টের সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন। প্রশাসন এগুলো বন্ধের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর গুড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। আটক করে মামলা দিয়ে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে যতদিন ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন আমদানি বন্ধ না করবে ততদিন এগুলো বন্ধ করা অসম্ভব।
ইএইচ