যশোর-খুলনা মহাসড়কের ব্যস্ততম শহর শিল্প, বাণিজ্য ও বন্দর নগরী নওয়াপাড়া মহাসড়কজুড়ে ইজিবাইক-মাহেন্দ্র ও থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ড। অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারের যশোর-খুলনা মহাসড়কটিতে বাড়ছে দুর্ভোগ।
সোমবার উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম শহর নওয়াপাড়া বাজারের নূরবাগ মোড়ে এ অবস্থা দেখা যায়।
নূরবাগ মোড়টির সাথেই সংযোগ রয়েছে নওয়াপাড়া টু-মণিরামপুর ভায়া কেশবপুর টু সাতক্ষীরা সড়কের।
এছাড়াও সংযোগ রয়েছে নওয়াপাড়ার ব্যস্ততম ক্লিনিক পাড়া ও হাসপাতাল রোডের। ফলে নওয়াপাড়া নূরবাগ রোডে ভোর থেকে গভীর রাত অবধি থাকে মানুষের বিচরণ। নূরবাগ মোড়েই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে স্বঘোষিত বাসস্ট্যান্ড।
প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বারবার এ স্থানে বাস না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি কখনই। এছাড়া মোড়টিতে সড়কের গা-ঘেঁষে বসছে ফুটপাতের দোকানিরা।
নূরবাগ মোড়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কের পাশে ফুটপাতের দোকান না বসানোর জন্য সাইনবোর্ডও দেয়া হয়েছে কয়েকবছর আগে। অথচ এ সাইবোর্ডের নিচেই বসছে ফুটপাতের দোকান। ফলে সচেতন মহলের কাছে বিষয়টি হাস্যকর হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, ব্যস্ততম এ মোড়টিতে হঠাৎ করেই জেকে বসেছে ইজিবাইক, ইজিভ্যান ও থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ড। তবে এটা কেবল মোড়টিতেই নয় শহরজুড়েই যেন গড়ে উঠেছে ইজিবাইক, ইজিভ্যান ও থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ড। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার মহাসড়কে ইজিবাইক, ইজিভ্যান ও থ্রি-হুইলার চালনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিলেও নওয়াপাড়া শহরে যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে এদের সংখ্যা।
বর্তমানে শহরটিতে সহস্রাধিক ইজবাইক, ইজিভ্যান ও থ্রি-হুইলার চলাচল করছে। এবং দিনদিন ইজিবাইক, ইজিভ্যান ও থ্রি-হুইলার চালকরা এতোটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে সড়কে ন্যূনতম শৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
এমনকি সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে নিয়োজিত হাইওয়ে থানা পুলিশেরও কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ গভীর ঘুমে নিমগ্ন রয়েছে। ফলে নওয়াপাড়া নূরবাগ মোড়ে প্রতিনিয়ত লেগে থাকছে যানজট। আর যানজটে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। কেবল তাই নয়, যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিবহন কাজে নিয়োজিত গাড়িকেও।
কেবল কোন ভিআইপি’র এ মহাসড়কে আগমন ঘটলেই মহাসড়কে সুনসান অবস্থা নেমে আসে। দেখা যায় থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর তোড়জোড়। তখন সাধারণ মানুষের চলাফেরায় শৃঙ্খলা ফেরাতেও ব্যস্ত হয়ে পড়েন পুলিশ প্রশাসন। আর ভিআইপি পার হয়ে যাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার পুরোনো চেহারায় ফিরে আসে যশোর-খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়া শহর।
মহাসড়কের উপরে ইজিবাইক, ইজিভ্যান ও থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ডের পাশাপাশি সড়কটিতে দুর্ভোগ বাড়াতে দেখা যায় সড়কের পার্শ্বের ব্যবসায়ীদের। তারা দিনভর সড়কের উপর ট্রাক ও পিকআপ রেখে মালামাল লোড আনলোডে ব্যস্ত থাকে।
অথচ হাইওয়ে পুলিশের এ সকল বিষয়ে কোন উচ্চবাচ্চ্য দেখা যায় না। বিশেষ করে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানায় নতুন ওসির আগমনের পর নওয়াপাড়া শহরে মহাসড়কের শৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তারা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত হোসেনের সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ইএইচ