সেবার ব্রতে চাকরি’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে মেধা ও শারীরিকভাবে ফিটনেস যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো প্রকার তদবির কিংবা ঘুষ বাণিজ্য ছাড়া, চাকরি পেলেন ২ জন নারীসহ মোট ১৫ জন প্রার্থী।
মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত পুলিশ কনস্টেবল পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের ফুল দিয়ে বরণ করেন জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর (পিপিএম বার)।
বুধবার খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে সম্পূর্ণভাবে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার)।
খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে আয়োজিত এ “ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি)/কনস্টেবল” পদে নিয়োগ পরীক্ষায় শারীরিক মাপ ও শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৬৬ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন । লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে ৪৯ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।মৌখিক পরীক্ষায় পুরুষ প্রার্থী ছিলেন ৪৫ জন এবং নারী ছিলেন ৪ জন। তাদের মধ্যে থেকে ১৫জন উত্তীর্ণ হয়।
এ সময় বিনা টাকায় পুলিশের চাকুরিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থী ও অভিভাবকরা খুশিতে আবেক-আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। তারা তখনো বিশ্বাস করতে পারছেনা টাকা ছাড়াই পুলিশে চাকুরি পেয়েছে। অশ্রুসিক্ত নয়নে অনেকের কান্না উপস্থিত সকলের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
চাকরি প্রার্থী পলি চাকমা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়ে খুশিতে আমি আত্মহারা। আমার বাবা একজন দিনমজুর। আমাদের সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। বাবা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছেন। আমি ১২০ টাকায় চাকরি পেয়েছি। আমাকে ১২০ টাকায় চাকরি দেওয়ার জন্য মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই।
চাকরি প্রার্থী রেখা আক্তার বলেন, আমার বাবা একজন স্বল্প আয়ের শ্রমিক। আমার বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল শয্যাশায়ী। আমার পরিবারে আমিই একমাত্র উপার্জনক্ষম। ছোট থেকেই আমার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন ছিল। আগের বছর ভাইভা দিয়েছি কিন্তু চাকরি হয় নাই। আজকে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। আমি ১২০ টাকায় চাকরি পেয়েছি। ১২০ টাকায় যে চাকরি হয় আমি না পেলে বুঝতেই পারতাম না। ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে পুলিশ সুপার মহোদয়কে ধন্যবাদ জানান।
এসময় পুলিশ সুপার মুক্তা ধর (পিপিএম বার) বলেন, “শারীরিক ফিটনেস, যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে আপনারা সকলে আজ এই জায়গায়।”
পুলিশ সুপার আরও বলেন, সততা ও কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ।” পরে পুলিশ সুপার মুক্তা ধর নির্বাচিত প্রার্থীদের অভিব্যক্তি শুনতে চান। এ সময় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নির্বাচিত কয়েকজন আনন্দে আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। তখনো তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. জসীম উদ্দিন পিপিএম, সহকারী পুলিশ সুপার জনাব সৈয়দ মুমিদ রায়হান সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এইচআর