ফেনীতে জাফর হোসেন (৫৫) নামে এক বৃদ্ধকে বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে। জড়িতদের বিচার দাবিতে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে জেলার দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত জাফর ওই ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের শেখ মুজিব মেম্বার বাড়ির নুর মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় বাবুর্চি ছিলেন।
স্থানীয় কোরাইশমুন্সি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরিফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি শান্ত করতে পরিবারের সদস্যদের থানা হেফাজতে নিয়ে পুলিশি পাহারায় লাশ দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে দীর্ঘদিন যাবৎ জাফর হোসেনকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে তার স্ত্রী ও সন্তানরা। সম্পত্তি লিখে নেয়ার জন্য নিয়মিত মারধর করা, অধিক পরিশ্রম করানো, উলঙ্গ করে রাখা, নষ্ট ও পঁচা খাবার দেওয়াসহ সব ধরনের নির্যাতন করতো তারা। সবশেষ গত ১৮ মার্চ খাবারে বিষপ্রয়োগ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করে স্ত্রী ও তার বড় ছেলে।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। দু-দিন পর গত বুধবার রাতে (২০মার্চ) তিনি মারা যান। ২১ মার্চ রাতে লাশ দাফন করার জন্য পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে গেলে এঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
এসময় জাফরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে হয়েছে দাবি করে স্ত্রী-সন্তানদের বিচার চান বিক্ষোভকারীরা।পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন।
নিহতের প্রতিবেশী নূর হোসেন মিয়া ও আব্দুল গোফরান জানায়, পরিবারের প্রাত্যহিক নির্যাতনে জাফর হোসেন রোগাক্রান্ত ও হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত খাবারে বিষপ্রয়োগ করে কৌশলে তাঁকে হত্যা করেছেন। এর বিচার হতে হবে। না হয় সমাজে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জাফরের বড় ছেলে জসিম উদ্দিন বলেন, পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে বাবা- মায়ের দ্বন্দ্ব ছিল। আমরা ভাই-বোনেরা চুপ থাকতাম। হতাশা থেকেই বাবা বিষপান করেছেন।
দাগনভূঞা থানার ওসি আবুল হাশিম বলেন, এ ঘটনায় গত ২১ মার্চ একটি অপমৃত্যু মামলা (মামলা নং-০২) রুজু করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিহত জাফরের স্ত্রী ও বড় ছেলেকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এআরএস