দাম কিছুটা চড়া হলেও ভোলায় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে বাড়ছে ভিড়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে কেনা-বেচা।
গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম ভোলার বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতান, এর মধ্যে সদর রোড কে জাহান মার্কেট, চক বাজার ও জিয়া সুপার মার্কেটে ভিড় সবচেয়ে বেশি। ঈদের মার্কেটগুলোতে দখল করে আছে দেশি-বিদেশি বাহারি রঙের পোশাক। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরা।
তবে অতিরিক্ত দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। ঈদের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলা প্রশাসনও। পোশাক কেনা শেষে সবাই ছুটে যাচ্ছেন জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে ভোলার মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
ঈদ বাজারে নারী ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি কিনছেন নায়রা, গারারা, সারারা, সুষমিতা, কাতান ওড়না, ভিক্টোরিয়া, লেহেঙ্গা ও পার্টি গাউন নামে বিভিন্ন থ্রি-পিস। তবে চাহিদা কম নয় শাড়িরও। গাদোয়াল, মাদুরাই, কাঞ্জিভরম, সাউথ ইন্ডিয়ান, সফট কাতান, বারিশ, বেনারসি, ঢাকাই জামদানি, ভারতীয় জামদানি, রাজশাহী সিল্ক ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িও বিক্রি হচ্ছে বেশ। শহরের জিয়া সুপার মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা সরকারি চাকরিজীবী মো. করিম হোসেন জানান, শহরের বেশ কয়েকটি মার্কেটে ঘুরেছেন তিনি। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় কয়েকটি মার্কেটে পোশাক দেখে জিয়া সুপার মার্কেটে চলে এসেছেন, এখানে এসেও চড়া দামে তাকে পোশাক কিনতে হয়েছে।
তার দাবি, পোশাকের কোয়ালিটির সঙ্গে দামের অনেক পার্থক্য রয়েছে। কেনাকাটা করতে আসা মামুন নামে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জানান, তার পরিবারের সব নারী সদস্যের জন্যই তিনি থ্রি–পিচ কিনেছেন। নানা নকশার থ্রি–পিচ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এবারের ঈদবাজারে আগের বছরের তুলনায় দাম বেশি।
পোশাক কেনাকাটা শেষে সবাই ছুটছেন জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে। শহরের লেদার ক্লাবে জুতা কিনতে আসা আনোয়ার হোসেন রুবেল জানান, ঈদের জন্য নতুন শার্ট ও প্যান্ট কিনেছেন তিনি। নতুন জুতা কিনতে লেদার ক্লাবে এসেছেন। তবে জুতার দামও চড়া।
কে জাহান মার্কেটে মিম কসমেটিকস হাউজে আসা সুমি আক্তার জানান, তার কেনাকাটা শেষ। শুধু গলার নেকলেস, চুড়ি ও নুপুর কিনতে কসমেটিকস দোকানে এসেছেন। সবকিছুর দাম চড়া হলেও ঈদ উদ্যাপন করতে সবকিছুই কিনতে হয়েছে।
পরিমল বস্ত্রালয়ের মালিক বাবলু সাহা বলেন, পোশাক তৈরির সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এবার ঈদের বেচাকেনা ভালো। বিশেষ করে থ্রি-পিচের বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। বর্তমানে দুই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে থ্রি–পিচ বেশি চলছে। আর ৩ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে।
শহরের জিয়া সুপার মার্কেটে অবস্থিত সাজ ফ্যাশনসের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে আধুনিক ও বাহারি নকশার পোশাক এনেছেন। যা সহনীয় দামে বিক্রি করছেন। তবে নারী ক্রেতাদের থ্রি–পিচের প্রতি আগ্রহ বেশি।
বিক্রেতারা বলেছেন, প্রতিবছরের মতো পুরুষ ক্রেতারা কিনছেন জিন্সের প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট ও পায়জামা-পাঞ্জাবি। এবার সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও কাজ করছে।
র্যাব-৮ ভোলার ক্যাম্প কমান্ডার, এএসপি জামাল উদ্দিন জানান পেট্রোল পার্টি শহর এলাকা প্রদক্ষিণ করছে। সিভিল টিমের সদস্যরা বিভিন্ন থানা এলাকায় নজরদারি রাখছে। এছাড়া বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিস্ট্রেটকে সাথে বিভিন্ন বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন।
এ বিষয় পুলিশ সুপার মো. মাহিদুজ্জামান আমার সংবাদ কে বলেন, ক্রেতারা যাতে খুশিমনে ঈদের কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে নজরদারি রাখছে।
এআরএস