সৈয়দপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
সৈয়দপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সম্ভাব্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে গেছে। ভোটারদের মন জয় করতে ইফতার সামগ্রী নিয়ে দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। চাইছেন দোয়া। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নির্বাচিত হলে থাকবেন সব সময় পাশে।

ঈদুল ফিতরের পরেই এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে সৈয়দপুরে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন দ্বিতীয় ধাপে এ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে বলে ইতোমধ্যে ঘোষিত তফসিলে তা প্রকাশ পেয়েছে।

আর এজন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রার্থীতা জানান দিতে ইফতার পণ্য বিতরণের অজুহাতে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সাথে সাক্ষাৎ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ছোটখাটো অনুষ্ঠানগুলোতেও তারা হাজির থাকছেন।

বিশেষ করে ইসলামী জলসাগুলোতে কোনো সম্ভাব্য প্রার্থীই হাজির থাকছেন না। দান খয়রাতের নামে টাকাও বিলাচ্ছে দুই হাতে। গরীব মিশকিনরাও এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না। সব মিলে নির্বাচনকে ঘিরে এবারের ঈদ আনন্দ সবার মাঝেই ভালোভাবেই ভাগাভাগি হবে বলে বিশিষ্টজনরা অভিমত ব্যক্ত করছেন।

এবার সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শতভাগ প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন বর্তমান পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজমল হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন, বিআরডিবির চেয়ারম্যান মহসীন আলী রুবেল, সাবেক ছাত্রনেতা ফয়সাল দিদার দিপু, বিএনপি নেতা অধ্যাপক শওকত হায়াৎ শাহ, ভিপি মোস্তফা ফিরোজ, জামায়াত নেতা মুনতাকিম, জাপা নেতা জয়নাল আবেদীন ঠিকাদার, আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ।

তবে ভোটারদের মাঝে খুব দ্রুত আলোচনায় জায়গা করে নিচ্ছেন মহসীন আলী রুবেল।

ক্লিন ইমেজের অধিকারী আজমল হোসেনকে সব প্রার্থীরাই ফ্যাক্টর মনে করছে। কারণ হিসেবে ভোটাররা জানান আজমল উপজেলাজুড়েই পরিচিত মুখ। দুইবারের উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। একবারের ইউপি চেয়ারম্যান। তার ছোট ভাই মাসুদ রানা পাইলট বর্তমানে ইউপি চেয়ারম্যান, ভাবী একই পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বড় ভাই জেলা পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোখলেছুর রহমান ২৭ বছর নিজ ইউনিয়ন খাতামধুপুরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসাবে এ পরিবারটি ভোটারবান্ধব পরিবার বলে সুখ্যাতি রয়েছে।

মোখছেদুল মোমিন এর আগে দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। সে কারণে তিনিও তৃতীয় দফায় চেয়ারম্যান হতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইছেন বলে প্রচার রয়েছে।

এদিকে মহসীন আলী রুবেল দীর্ঘ ৯ বছর ধরে একনাগাড়ে বিআরডিবি’র (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড) চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করায় তৃণমূলের মানুষের সাথে রয়েছে সখ্যতা। এ প্রার্থীর দেয়া তথ্যমতে তার দপ্তরাধীন কর্মের সঙ্গে সমিতিভুক্ত পরিবারের সংখ্যা ১২ হাজার। এসব পরিবারের মানুষের সঙ্গে তার রয়েছে আত্মিক সম্পর্ক। আর এরা সকলেই কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। খেটে খাওয়া মানুষ। তারাই তার ভোটের পুঁজি। এজন্য তিনি চেয়ারম্যান পদে লড়তে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন।

অধ্যাপক শওকত হায়াৎ শাহ স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত। বিএনপি ঘরানার রাজনীতিতে রয়েছে তার শক্তিশালী অবস্থান। সৈয়দপুর শহরের লক্ষাধিক ভোটারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ভোটার বিএনপির সমর্থক। সেই প্রত্যাশাকে ঘিরেই তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের চেয়ারটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

ফয়সাল দিদার দিপু জাতীয় ছাত্র সমাজের ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা। লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেন্দ্রীয় ছাত্র রাজনীতি করার সুবাদে সব দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে রয়েছে তার সুসম্পর্ক। নিজ উপজেলা সৈয়দপুরে ইতোমধ্যে জনবান্ধব নেতা হিসাবে সুনাম কুড়িয়েছে। আচার আচরণে ভদ্র ইমেজের এই প্রার্থী খুব সহজেই সাধারণের মাঝে নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারছেন।

প্রকৌশলী একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তার বাবা ও মা দুজনই আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন। সেই হিসাবে তিনিও একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসাবে সমাজে জায়গা করে নিয়েছেন।

ভিপি মোস্তফা ফিরোজ কর্মজীবনে ইটভাটা ব্যবসায়ী হলেও ছাত্রলীগের রাজনীতি করার সুবাদে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের ছিলেন নির্বাচিত ভিপি। দীর্ঘদিন ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

জামায়াত নেতা মুনতাকিম পেশায় শিক্ষক হলেও সৎ মানুষ হিসেবে সমাজে ঠাঁই করে নিয়েছেন। তাদের দলের ভোটার সংখ্যাও বেশ ভালো।

ঠিকাদার জয়নাল আবেদীন দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয়। বেশ কয়েকবার ভোট করে হেরেছেন। তাই এবারে জীবনের শেষ নির্বাচন করতে ভোটের মাঠে জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইএইচ