সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের বোরো মৌসুমের ধান কর্তনের কাজ পুরোদমে চলছে। হাওরের চারিদিকে ধান কর্তনের ধুম পড়েছে।
পাকা ধানের ঘ্রাণে মুখরিত নলুয়ার, মইয়ারসহ অন্যান্য হাওর। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শ্রমিকরা নগদ অর্থ অথবা ধানের বিনিময়ে দলবদ্ধভাবে গৃহস্থের জমির ধান কাটছেন। হাওরে হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়েও চলছে কর্তনের কাজ।
আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হবে। হাইব্রিড জাতের হিরা-২ ধান ও এবার এ উপজেলায় উৎপাদিত বিনা-২৫ অধিক ভালো হয়। কিন্তু বোরো মৌসুমের ফসল উৎপাদনে অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি। তবে ভালো ফলন ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অনেকটা স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছেন তারা।
কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার পুরো জগন্নাথপুর উপজেলা ২০ হাজার ৩’শ ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়। এরমধ্যে হাওরে ১৪ হাজার ৪’শ ১০ হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদন করা হয়।
চলতি মাসের ৫ এপ্রিল থেকে ধান কাটার কাজ শুরু হলে এ পর্যন্ত ১১’শ ৫২ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। রমজান মাসের পর এখন পুরোদমে চলছে ধান কর্তনের কাজ। সিলেটের জৈন্তাপুর, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরসহ, ময়মনসিংহ, পাবনা, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক জগন্নাথপুর উপজেলার ছোট-বড় হাওর ও কৃষি জমিতে ধান কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
নির্দিষ্ট সময়ে ধান কাটার কাজ শেষ করার জন্য শ্রমিকদের পাশাপাশি ৬৮টি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে পাকা ধান কর্তনের কাজ চলছে। ২০-২৫ দিনের মধ্যে পুরো ধান কর্তনের কাজ শেষ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ১২টি মেশিনও সংগ্রহ করা হয়।
হাওরে ধান ঝাড়া ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত কৃষানি আমিনা বেগম জানান, ৯ একর জমি চাষাবাদ করেন স্বামী আনফর আলী। তারাও কৃষি নির্ভরশীল পরিবার। এবার ভালো ফলন হওয়ায় পরিবারের সবাই খুশি। আশা করছেন কিছুদিনের মধ্যে পুরো জমিনের ধান কর্তনের কাজ শেষ হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ জানান, এ পর্যন্ত জগন্নাথপুর উপজেলার ১১’শ ৫২ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড হিরা-২ ও নতুন উৎপাদিত বিনা-২৫ ভালো হয়। আমাদের যথেষ্ট তদারকি থাকা সত্ত্বেও কিছু কৃষক আমাদের নির্দেশনা সঠিকভাবে না মানায় বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি আশা করছেন ২০-২৫ দিনের মধ্যে সবগুলো জমির ধান কর্তন শেষ হবে।
ইএইচ