বৃষ্টির জন্য শরীয়তপুরে ইসতিসকার নামাজ আদায়

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২:১৬ পিএম
বৃষ্টির জন্য শরীয়তপুরে ইসতিসকার নামাজ আদায়

তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। মানুষের সঙ্গে হাঁসফাঁস দেখা দিয়েছে পশু-পাখির মধ্যেও। তীব্র তাপপ্রবাহের এমন গরম থেকে মুক্তি পেতে শরীয়তপুরে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছে মুসল্লীরা। নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে শরীয়তপুরের  ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ  উপজেলায় খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার নামাজের আয়োজন করা হয়।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার গৈড্যা এম এস ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার মাঠে সকাল ৯ টায় অনুষ্ঠিত নামাজের ইমামতি করেন মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মাওলানা আনোয়ার হোসেন। ডামুড্যা মুসলিম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত নামাজের ইমামতি করেন হাটুরিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বাতেন শরীয়তপুরী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৈশাখ মাসের শুরু থেকে সারা দেশের মতো শরীয়তপুরেও শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহের গরমে খেটে খাওয়া শ্রমিক, সাধারণ মানুষসহ পশু-পাখিও হাঁসফাঁস করছে। এমন গরম থেকে মুক্তি পেতে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে ও ডামুড্যায় বৃষ্টির জন্য হাজারো মুসল্লী জামায়াতের সঙ্গে ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে গরমের কারণে কৃষকের ফসল ও মানুষের জীবন যেন বিপন্ন না হয়, সেজন্য দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন মুসল্লীরা।

ডামুড্যা মুসলিম সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেখা যায়, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায় এক হাজার মুসল্লী ইসতিসকার নামাজ আদায় করার জন্য মাঠে এসেছেন। ইমাম প্রথমে মুসল্লিদেরকে নামাজের নিয়ম কানুন শিখিয়ে দেন। এরপর জামায়াতের সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে খুতবা পাঠ করার পর আল্লাহর নিকটে দুই হাত তুলে প্রচণ্ড-গরম, তাপপ্রবাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি চেয়ে মোনাজাত করেন মুসল্লীরা।

ইসতিসকার নামাজ পড়তে এসে   মুসল্লীরা  বলেন, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালাসহ সবাই কষ্টে আছে। বৃষ্টির নাম গন্ধ নেই। তাপমাত্রা ক্রমেই বেড়েই চলছে। এ জন্য আমরা মহান আল্লাহর দরবারে প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়েছি। আল্লাহ তায়ালা রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করে সকলকে মুক্তি দিবেন ইনশাআল্লাহ।

ইসতিসকার নামাজের ইমাম ও হাটুরিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বাতেন শরীয়তপুরী বলেন, অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এখন একমাত্র আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমরা সবাই নিরুপায়। তাপপ্রবাহের দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির আশায় মুসল্লীদের নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে রাসূল (সা.) এর সুন্নত মেনে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছি। নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করেছি, তিনি যেন আমাদের পাপ মার্জনা করে রহমতের বৃষ্টি দিয়ে জনজীবনে প্রশান্তি ফিরিয়ে দেন।

ডামুড্যা পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল  বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষসহ কৃষি ফসলের অবস্থা খুবই শোচনীয়। আল্লাহর কাছে আমাদের গুনাহ থেকে মাফ চেয়ে বৃষ্টির প্রার্থনা করেছি। উপজেলা ও পৌরসভার সকল ধর্মপ্রাণ মুসল্লী নামাজে অংশ নিয়েছেন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন শরীয়তপুরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ আবু তালহা বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টি শুরু হলে ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। এই নামাজ রাসূল (সা.) এর সুন্নত। ইসতিসকার নামাজ সাহাবী, তাবেয়ী,তাবে তাবেয়ীসহ সকল যুগের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরাই আদায় করেছেন। বর্তমানে দেশে তাপপ্রবাহের কারণে প্রচণ্ড- গরম দেখা দিয়েছে।

এ গরম থেকে মুক্তির জন্য ভেদরগঞ্জ ও ডামুড্যার মুসল্লীরা ইসতিসকার নামাজ আদায় করে বৃষ্টির প্রার্থনা করেছেন। আল্লাহর কাছে আমিও দোয়া করি, তিনি যেন বৃষ্টি বর্ষণ করে জনজীবনের দুর্ভোগ লাঘব করে দেন।


বিআরইউ