ডিলার-খাদ্য কর্মকর্তার বিরোধ: চাল পাচ্ছে না ৫শত ওএমএস কার্ডধারী

রাজবাড়ী প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
ডিলার-খাদ্য কর্মকর্তার বিরোধ: চাল পাচ্ছে না ৫শত ওএমএস কার্ডধারী

খাদ্য নিয়ন্ত্রকের চাহিদা পূরণ না করায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৫শত কার্ডধারীর ডিলার মনোয়ার হোসেন মনোকে চালের ডিও প্রদান করা হয়নি। ফলে ওই সকল কার্ডধারী ঈদের আগে ও পরে কোন চাল পাননি।

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ডিলার মনোয়ার হোসেন মনো গত ২৮ মার্চ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার সময় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও পাংশা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক একেএম শাহনেওয়াজ তদন্ত করেছেন।

ডিলার মনোয়ার হোসেন জানান, ওএমএস ডিলারদের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবি কার্ডধারী পরিবারকে ওএমএসএর চাল বিক্রির জন্য গত ২১ জানুয়ারি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) শ্যাম প্রসাদ চাকমা ডিলারের অনুকূলে ওএমএসএর ৫ মেট্রিকটন চাল বিক্রির উপ-বরাদ্দ আদেশ প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত জানুয়ারি মাসে রাজবাড়ী সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তারিকুজ্জামানের কাছে ডিও আনতে যান। তিনি ২ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তিনি বলেন যে, তাকে ঘুষ প্রদান ছাড়া ওএমএসএর চাল বিক্রির সুযোগ দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের ডিও আনতে গেলে দেখা যায় যে, ৪৬ ও ৭৭নং স্মারকের ওএমএসএর চাল বিক্রির উপ-বরাদ্দ আদেশ তার নামে কোন ডিও ইস্যু করা হয়নি।

তিনি আরও জানান, গত ৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় তিনিসহ আরও ৩ জন অফিসে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ট্রেজারি চালান আনতে যান। অফিস সহকারীর নিকট ট্রেজারি চালান চাইলে তিনি জানান আপনাকে কোন চালান দেওয়া যাবে না স্যার (তারিকুজ্জামান) এর নির্দেশ আছে, বিধায় আপনাকে ট্রেজারার চালান দিতে পারব না।

তখন অফিস সহকারীকে কেন ডিও দিবেন না কি কারণে? অফিস সহকারী বলেন, স্যারের নিষেধ আছে। এর প্রেক্ষিতে পুনরায় বলি তাহলে কি আমার লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে?

তিনি বলেন, আপনার লাইসেন্স বাতিল হয় নাই। তাহলে ডিও বাবদ আমার মোবাইলে কোন ম্যাসেজ দিয়েছেন কিনা এর উত্তরে অফিস সহকারী বলেন, স্যার নিষেধ করেছে। গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের টিসিবির ডিও দেন নাই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যারের নিষেধ ছিল।

ডিলার মনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১৯ মার্চ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তারিকুজ্জামান ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাফায়েত হোসেন তার দোকানে যায় এবং প্রকাশ্যে হুমকি দেয় যে, অফিসের নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং গুদাম কর্মকর্তা শাফায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে (হাইকোর্টের মামলা নং ১৫০০৭৩১/২০২৪) দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আর তা না করলে আপনার লাইসেন্স বাতিলের জন্য যা যা করার দরকার তাই করব। এখানে এটা স্পষ্ট যে, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তারিকুজ্জামানকে তার চাহিদা মাফিক ঘুষ প্রদান না করায় তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার নামে উপ-বরাদ্দ আদেশ বাতিল করে ঘুষ খেয়ে অন্য জনের নামে উপ-বরাদ্দ আদেশ প্রদান করেন।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও পাংশা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক একেএম শাহনেওয়াজ বলেন, ডিলারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নিকট পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হবে।

ইএইচ