বাবলু হত্যা রহস্য উদঘাটনে নেই অগ্রগতি

কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৪, ০৮:১৪ পিএম
বাবলু হত্যা রহস্য উদঘাটনে নেই অগ্রগতি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বালু ব্যবসায়ী বাবুল ইসলাম বাবলু হত্যাকাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই। গত ১১ মার্চ দিবাগত রাতে উপজেলার কাঠালবাড়ি গ্রামীণ রাস্তার পাশে ডোবা থেকে বাবুল ইসলাম বাবলুর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।

নিহতের মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশেই একটি গাছে ঠেস দিয়ে দাড় করানো ছিল। শুরু থেকেই অপমৃত্যু মামলা দায়েরের পক্ষে ছিল কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর। ঘটনার চারদিন পর স্থানীয় এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা নেয় পুলিশ।

নিহতের স্ত্রী দাবি, এজাহারে আসামিদের নাম উল্লেখ করার চেষ্টা করলেও রহস্যজনক কারণেই অজ্ঞাত আসামি দেখিয়েই মামলাটি রেকর্ড করতে হয়। পরিবারের দাবি নিহত বাবলুর সাথে আক্কাস আলী নামে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বালু ব্যবসা ছিল। সে রাতে আক্কাস আলী বাবলুকে ডেকে নিয়ে খুন করেন। শুরু থেকেই পুলিশ বলছে এটা হত্যাকাণ্ড নয় শুধুমাত্র দুর্ঘটনা। তবে ছায়া তদন্তের সঙ্গে যুক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হতে পারে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, বাবুল ইসলাম বাবলু ও আক্কাস আলী উপজেলার শিমুল তলা আশ্রয় কেন্দ্রের পাশঘেষে একটি খাল থেকে ইজারাবর্হিভূত স্থান থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিল।

নিহতের মামা অ্যাডভোকেট কামাল হোসাইন জানান, ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে শিমুলতলায় বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত বাবুলের মালিকানাধীন ড্রেজার মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছিল। চুরি ঘটনা নিয়ে বাবলু ও আক্কাস আলীর মধ্যে দুই দফা হাতাহাতি হয়। এর প্রেক্ষিতেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। সেখানে আক্কাস আলীর সেল্টারে আরও ১৫-১৬টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল। তবে ঘটনার পরে আক্কাস আলীকে পুলিশ কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তথ্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেন।

এদিকে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকলেও সুরতহাল প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করেনি পুলিশ।

সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি কারক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অজয় চন্দ্র রায় বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনের বাইরে শরীরে আর কোনো ক্ষতচিহ্ন নেই।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ডোবা থেকে লাশ উদ্ধারের সময় নিহতের কানের উপরে মাথার বাম পার্শ্বে রক্তাক্তের চিহ্ন দেখা যায়। নিহতের দাফনপূর্ব গোসলের সময় পূর্বে দেখা সেই স্থান থেকে রক্ত ঝড়ছিল। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে চাকু দিয়ে ঘা দেওয়া হয়েছিল। সুরতহালে না থাকলেও থানায় রেকর্ডকৃত এজাহারে চাকুর ঘা উল্লেখ্য করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা অজয় চন্দ্র রায় আমার সংবাদকে বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না পাওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেসন (পিভিয়াই) অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়াধীন। তবে এখনো অর্ডারকপি হাতে পাইনি।

ইএইচ