লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমান জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে অল্প খরচে বেশি ফলনে লাভের আশা করছেন কৃষকেরা। একদিকে বাম্পার ফলন, অন্য দিকে ভুট্টা চাষে প্রান্তিক কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করার সম্ভাবনায় এ উপজেলায় ভুট্টা চাষে অভূতপূর্ব সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছে কৃষকরা।
তবে ভুট্টার চাষের পুরো মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন ও বিদ্যুৎ চালিত মটার দিয়ে ভুট্টা ক্ষেতে পানি সেচ করতে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়েছে চাষিদের। বৃষ্টি না হওয়ায় রোগ-বালাই বেশি দেখা দেওয়া এবং তীব্র তাপদাহের কারনে কিছু কিছু জায়গায় ক্ষেত পুড়ে গিয়ে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠগুলোতে ভুট্টা চাষ হয়েছে চোখে পড়ার মতো। ভুট্টা ঘরে তোলার এই মৌসুমে মাঠগুলো ভুট্টার শুকনা পাতা ও গাছগুলো সোনালী রঙে পরিপূর্ণ। এ সময় কৃষকরা ভূট্টা গাছের মাথা ছাঁটাই করা, কেউবা ক্ষেত থেকে ভুট্টা তুলতে ব্যস্ত, আবার কেউ মাড়াই করা ভুট্টা পরিষ্কার করাসহ রোদে শুকিয়ে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি আতাউর রহমান বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার অত্র ইউনিয়নে রেকর্ড পরিমান ভুট্টা চাষ হয়েছে। আমন ধান তোলার পড়েই ভুট্টার বীজ রোপণ করতে হয়। এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ১৪-১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমির ভুট্টা বিক্রি হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা।
আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির পূর্বে উত্তর অঞ্চল মঙ্গা পীড়িত ছিল। অনুর্বর জমিতে ফসল উৎপাদন না হওয়ায় অনাহারে অর্ধাহারে জীবন ধারণ করত। দিন পরিবর্তন হয়েছে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির কারণে অল্প জমিতে লাভজনক অধিক ফসল উৎপাদন এবং অত্র অঞ্চলে প্রধান অর্থকরী ফসল ভুট্টা চাষ করে জীবন জীবিকার মান উন্নত সহ অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, রবি ও খরিফ মৌসুমে ভুট্টা এই এলাকার প্রধান অর্থকরী ফসল। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ৬ শত ৯০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা এবার ছাড়িয়ে গেছে। ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকদের সহযোগিতায় প্রণোদনা প্রদান করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও রোগ-বালাই কম হওয়ায় কৃষকেরা কাঙ্ক্ষিত ফলন আশা করছেন।
বিআরইউ