কোরবানির গরু-ছাগল লালন-পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় চলতি বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন প্রায় সাড়ে আট হাজার পশু।
গতবছরের চেয়ে এবারে দুই হাজারেরও বেশি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা।
সৈয়দপুর প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ছয় হাজারের মতো। কিন্তু খামারিরা প্রস্তুত করেছেন প্রায় সাড়ে আট হাজারের মতো পশু। যা চাহিদার চেয়ে দুই হাজারেরও বেশি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে।
এবার উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে সৈয়দপুরের খামারিদের প্রস্তুত করা পশু সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
সূত্রটি আরও জানায়, সৈয়দপুর উপজেলায় নিবন্ধিত গরু খামার রয়েছে সাতটি, ছাগল ও ভেড়ার খামার রয়েছে তিনটি। অনিবন্ধিত গরু ও খাসির খামার রয়েছে অগণিত। কারণ শহরসহ উপজেলার গ্রামগঞ্জে প্রায় বাড়িতেই রয়েছে ৮-১০টি বা ২০-২৫টি বিক্রির উপযুক্ত গরু ও ছাগল রয়েছে।
খামারিরা জানান, কদিন পরেই পুরোদমে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনাবেচা। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। যে পরিমাণ দেশি গরু ও ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে এগুলো দিয়েই সৈয়দপুর তথা নীলফামারী জেলার মানুষের কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
খামারিরা আরও জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে পর্যাপ্ত দেশি জাতের গরু ও ছাগল পালন করা হয়েছে। গরুকে খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, ব্রান্ড, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেকটা বেড়েছে। একই সঙ্গে চোরাই পথে যাতে ভারতীয় পশু ঢুকতে না সেদিকে নজর রাখার দাবি জানান তারা।
সৈয়দপুর পৌর এলাকার ইউসুফ ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা গেছে, গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারের লোকজন। পৃথক পৃথক খাটালে দেশি জাতের গরু ও ছাগলের পরিচর্যা করা হচ্ছে।
ইউসুফ ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব জামিল আশরাফ মিন্টু বলেন, আমাদের খামারে কোরবানির জন্য সব দেশি প্রজাতির গরু ও ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে। গরুগুলোর দাম কি রকম জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার খামারে ৬০ হাজার থেকে চার লাখ টাকা মূল্যের গরু আছে।
তিনি আরও বলেন, পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেক বেড়েছে। গরুগুলোকে প্রতিদিন দুই বেলা প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন ভুট্টা, খৈল, ব্রান্ড, কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি ও খড় খাওয়ানো হয়। গোসল করানো হয় প্রায় প্রতিদিনই। পশুর থাকার জায়গা পরিষ্কার রাখা হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক ফ্যান চালিয়ে পরিবেশ ঠিক রাখা হয়।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার রায় বলেন, গরুকে দানাদার খাদ্য ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর জন্য খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভিটামিন খাওয়াতেও বলা হচ্ছে খামারিদের। তবে গরুকে নিষিদ্ধ কোনো রাসায়নিক ও হরমোন ওষুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ইএইচ